পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8象 ভারত-প্ৰতিভা । দেখাইতেন। শত সহস্ৰ ব্যক্তি কেশবচন্দ্রের জ্ঞানগর্ভ, যুক্তিপূর্ণ, ওজস্বিনী বক্তৃতায় আকৃষ্ট হইতেন। নবদ্বীপের পণ্ডিতগণ পৰ্যন্ত সহানুভূতি প্ৰকাশ করিতেন। কৃষ্ণনগরের পর কলিকাতাতেও পাদরীগণের সহিত প্ৰবল বাগযুদ্ধ চলিতে লাগিল। পরিহাস্যরসিক সুলেখক লালবিহারী দে কেশবচন্দ্রকে বিদ্রুপপূৰ্ণ প্রবন্ধে আক্রমণ করিতে লাগিলেন। কবিবর। নবীনচন্দ্ৰ সেন লিখিয়াছেন,-“ব্ৰাহ্মধৰ্ম্মের আন্দোলনে কলিকাতা সহর বিধ্বস্ত । এই আন্দোলনের নেতা এক দিকে কিশোর কেশবচন্দ্ৰ, অন্য দিকে খৃষ্টধৰ্ম্মাবলম্বী লালবিহারী। দুই জনের মধ্যে বক্তৃতায় কবির লড়াই আরম্ভ হইল। বাগিতায় কেশবচন্দ্র এবং বিদ্রুপে লালবিহারী অদ্বিতীয় ।” অবশেষে কেশবচন্দ্রের অসামান্য প্ৰতিভা ও হৃদয়া কর্ষিণী বাগিতায়ই বিজয়ী হইল। লোকমত র্তাহারই প্রামাণ্য-যুক্তিতে প্রাধান্য স্বীকার করিল ; ব্ৰাহ্মসমাজ শক্তিমান হইল ; পাদ্ৰীগণ দমিয়া গেলেন। ডাক্তার ডিফল প্রমুখ পাদ্রীগণ প্ৰকাশ্য সংবাদপত্ৰে ভঁাহাকে আক্রমণ করিতে লাগিন। শিক্ষিত যুবকবৃন্দ দলে দলে উপাসনালয়ে সমবেত হইয়া কেশবচন্দ্রের অগ্নিস্রাবিনী বক্তৃতায় ও জ্ঞানভক্তিপূর্ণ যুক্তিযুক্ত উপদেশামৃতে উদ্দীপিত ও অনুপ্রাণিত হইতে লাগিল। অনেক যুবক তঁাহার বক্তৃতা-শ্রবণে ও পুস্তিকাপাঠে পাদ্ৰীগণের প্রলোভনজাল ছিন্ন করিয়া খৃষ্টধৰ্ম্ম-গ্রহণে বিরত হুইল এবং ব্ৰাহ্মধৰ্ম্ম গ্ৰহণ করিল। ১৮৬১ খৃষ্টাব্দে কেশবচন্দ্রের উদ্যোগে ধৰ্ম্মালোচনার জন্য “সঙ্গত-সভা” প্ৰতিষ্ঠিত হয়। উল্টাড়িঙ্গির বাগানে এই সভার বোধনে বিশেষ উৎসব হইয়াছিল। এই সভায় বহু যুবক কেশবচন্দ্রের নিকট সমবেত হইয়া জীবন-সমস্যা ও ধৰ্ম্মের জটিল রহস্যের সমাধান করিত। . . ' '