পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

చి ভারত-প্রতিভা সম্মুখে দাড়াইয়া ভক্তি-উচ্ছসিত কণ্ঠে প্ৰাণস্পৰ্শিভাবে বক্তৃতা করিতে আরম্ভ করিলেন। ‘ব্রাহ্মধৰ্ম্মের অনুষ্ঠান' পুস্তিকা-পাঠে সঙ্গত-সভা উপবীতবিরোধী জানিয়া তিনি সভায় যোগদান করেন ; বাগিবর কেশবচন্দ্রের সহিত সুপরিচিত হইয়া সৌভ্রাতৃবন্ধনে আবদ্ধ হন। সঙ্গত-সভায় আলোচনায়-ধ্যানে তন্ময় হইয়া এক এক দিন রাত্ৰি প্ৰভাত হইয়া যাইত । সভার অনুষ্ঠিত সত্য-সমূহ তিনি আত্মজীবনে সাধন করিতে লাগিলেন। তিনি লিখিয়াছেন,-“সঙ্গতেই অধিকাংশ ব্রাহ্ম-ভ্রাতার সহিত পরিচিত হই। ব্ৰাহ্ম-ভ্রাতাদের সহবাসে কি অসীম আনন্দভোগ করিতাম ! * প্ৰত্যেক ব্ৰাহ্মস্রাতাকেই জ্যেষ্ঠ ভ্ৰাতা বলিয়া বোধ হইত। তঁাঙ্গাদের মুখ-নিঃসৃত সামান্য উপদেশও বহুমূল্য বোধ হইত।” অতঃপর তিনি শান্তিপুরে গমন করেন। মাতার কাতর অনুরোধেও তিনি উপবীত গ্ৰহণ করিয়া সংস্কারের বশীভুত হইলেন না। তঁহার জ্যেষ্ঠ প্ৰতিবেশিগণের উত্তেজনায় তাহাকে ত্যাগ করিলেন। বিজয়কৃষ্ণ গ্রামে থাকিলে গ্রামের যুবকদের ব্রাহ্ম হইবার আশঙ্কা করিয়া গোস্বামিগণের পরামর্শে প্রতিবেশিগণ র্তাহাকে রাস্তায় গালি দিত, থুথু ও ইট বৃষ্টি করিত-পাগল বলিয়া উপহাস করিত। নিন্দী, তিরস্কার, লাঞ্ছনা, অঙ্গের ভূষণ করিয়া-সত্যই অবশেষে জয়যুক্ত হইবে এই অটল বিশ্বাসে নির্ভর করিয়া, বিজয়কৃষ্ণ শান্তিপুরে ব্রাহ্মসমাজের প্রতিষ্ঠা করিলেন। আত্মীয়গণ কর্তৃক পরিত্যক্ত হইয়া তিনি ভগ্নীপতি কিশোরীচন্দ্র মৈত্ৰেয়ের সহিত কলিকাতায় আসিলেন। ভগ্নী, ভগ্নীপতি, তাহার স্ত্রী প্রভৃতি সকলে মিলিয়া কলিকাতার বাসায় ভক্তি ও একাগ্রতার সহিত প্ৰত্যহ “পারিবারিক উপাসনা করিতে লাগিলেন।