পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহাত্মা বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী । বিনা ব্ৰহ্মসমাজের কল্যাণ নাই’ সিদ্ধান্ত করেন। কলিকাতায় ফিরিয়া গোস্বামী মহাশয় ব্ৰাহ্মসমাজে সমস্ত দিন উপবাস করিয়া ধ্যান, ধারণা, আৰাধনা ও প্রার্থনা করিতে লাগিলেন । বিজয়কৃষ্ণের অগ্রজ ব্ৰজগোপাল গোস্বামীর কীৰ্ত্তনে প্ৰেমভক্তি উচ্ছসিত হইতে দেখিয়া কেশবচন্দ্ৰ ব্ৰাহ্মসমাজে সংকীৰ্ত্তন-প্ৰথা প্ৰবৰ্ত্তিত করিলেন । কেশবচন্দ্ৰ এই সময় শ্ৰীৰামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের উপদেশমত প্ৰেমভক্তিতত্ত্ব ও বৈরাগ্য লাভ কবিয়া সাধনে প্ৰবৃত্ত হন, এবং “ভাবত-আশ্রম’ উদ্যানে ধাৰ্ম্মিক পরিবারবর্গেব সম্মিলন করিয়া সাধু অঘোবিনাথকে যোগ-সাধন ও বিজয়কৃষ্ণকে সংযমী হইয়া ভক্তিসাধনে প্ৰবৃত্ত কবেন। পরে বহু ক্লেশ-স্বীকাব করিয়া গোস্বামী মহাশয় কেশবচন্দ্রের সহিত লক্ষ্মৌ, দেরাদুন, বেরিলি, সাজাহানপুর, সাহরাণপুর লাহােৰ, অমৃতসব, আগ্রা, কানপুর, এলাহাবাদ, জব্বলপুৰ প্ৰভৃত্ত্বি স্থানে গিয়া ব্ৰাহ্মধৰ্ম্ম প্রচার করেন । পূৰ্ব্ব-বাঙ্গালায় প্ৰচাব করিয়া বিজয়কৃষ্ণ উত্তরপশ্চিমপ্রদেশে গমন করেন। মুঙ্গেবে ‘ব্রাহ্মধৰ্ম্মের উদারতা, বৃন্দাবনে “চৈতন্য ও পবিত্ৰতা” সম্বন্ধে বক্তৃতা কবিয়া বৈষ্ণবগণকে তিনি মুগ্ধ করেন। পরে লক্ষ্মৌ, মথুরা, আগ্রা, লাহোর প্রভৃতি স্থানে বক্তৃতা, উপাসনা ও আলোচনায় লোকের মন ধৰ্ম্মোৎসাহে উৎসাহিত করেন। মুঙ্গেরে অবস্থানকালে তঁহার জ্যেষ্ঠ কন্যার শোকপ্রশমনের জন্য ‘শোকোপহার” নামে কবিতা-পুস্তিকা প্ৰণয়ন ও প্রচার করেন। আগ্ৰায় তাজমহলের শোভাসনিদর্শনে তিনি পুলকিত হন। পরে কৃষ্টিয়া ও কুমারখালী ঘুরিয়া ঢাকায় প্রত্যাবৃত্ত হইয়া পূৰ্ব্ববাঙ্গালী ব্ৰাহ্মসমাজের আচাৰ্য্য মনোনীত হন। তৎপরে পুনরায় কলিকাতায় প্ৰত্যাবৰ্ত্তন করেন ।