পাতা:মহাত্মা কালীপ্রসন্ন সিংহ.djvu/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

shese অধ্যাপকদিগকে যে ভাষায় কথোপকথন করিতে শুনিয়াছি, তাহা সংস্কৃতব্যবসায়ী ভিন্ন অন্য কেহই ভাল বুঝিতে পারিতেন না। র্তাহারা কদাচ খেয়েঃ’ বলিতেন না,—‘খদির’ বলিতেন ; কদাচ চিনি’-বলিতেম না—“শর্করা বলিতেন। ‘ঘি’ বলিলে তাহাদের রসনা অশুদ্ধ হইত, আজ্যই বলিতেন, কদাচিৎ কেহ স্কৃতে নামিতেন। চুল’ বলা হইবে না,—‘কেশ’ বলিতে হইবে । ‘কলা’ বলা হইবে না,”--রস্তা’ বলিতে হইবে। ফলাহারে বসিয়া ‘দই’ চাহিবার সময় দধি বলিয়। চীৎকার করিতে হইবে। আমি দেখিয়াছি, একজন অধ্যাপক এক দিন ‘শিশুমার ভিন্ন শুশুক' শব্দ মুখে আনিবেন না, শ্রোতারাও কেহ শিশুমার অর্থ জানে না। সুতরাং অধ্যাপক মহাশয় কি বলিতেছেন, তাহার অর্থবোধ লইয়া অতিশয় গণ্ডগোল পড়িয়া গিয়াছিল। পণ্ডিতদিগের কথোপকথনের ভাষাই যেখানে এইরূপ ছিল, তবে তাহাদের লিখিত ভাষা আরও কি ভয়ঙ্কর ছিল, তাহ বলা বাহুল্য ।” "যেমন গ্রাম্য বাঙ্গালী স্ত্রীলোক মনে করে যে, শোভা বাড়ুক না বাড়ক, ওজনেভারি সোণ অঙ্গে পরিলেই অলঙ্কার পরার গৌরব হইল, এই গ্রন্থকৰ্ত্তার তেমনই জনিতেন, ভাষা সুন্দর হউক বা না হউক, দুৰ্ব্বোধ্য সংস্কৃত বাহুল্য থাকিলেই রচনার গৌরব হইল।” ইহাদের এই কৃত্রিমতাপ্রিয়তাহেতু বাঙ্গালা নীরস, শ্রীহীন ও দুর্বল হইয়া রহিয়াছিল। তাই কালীপ্রসল্লের এই আক্রমণ। সমাজে ও সাহিত্যে কপটতার ও কৃত্রিমতার উপর আন্তরিক ঘৃণাই কালীপ্রসরের আক্রমণের তীব্রতার কারণ । আন্তরিকতাই কালীপ্রসন্নের কৃত কাৰ্য্যের গৌরবের ও সাফল্যের কারণ। আন্তরিকতাই তাহার কাৰ্য্যের প্ররোচক। তাই বাঙ্গালায় এই দ্বিতীয় প্রতিভাপুনঃপ্রদীপ্তির সময় তিনি বাঙ্গাল সাহিত্যের জন্য