পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কারাকাহিনী।
৩১

পাইলেন তখন সে সৌভাগ্য আমার হইল। আমার একাজে অল্প সল্প অভ্যাস ছিল, সুতরাং কোন বিপদে পড়িতে হয় নাই। চারি দিন পর্যন্ত এ কাজ আমার হাতে ছিল, তাহার পর মিঃ হরিলাল গান্ধী এই ভার গ্রহণ করিলেন।

 যখন প্রথম জেলে যাই তখন সেখানে শয়ন করিবার তিনটী মাত্র কুঠুরী ছিল। তাহারই মধ্যে ভারতবাসীদের একত্র রাখা হইত। এই জেলে ভারতবাসী ও কাফ্রিদের আলাদা রাখা হইত।

জেলের ব্যবস্থা।

 পুরুষদের জেলে দুইটী বিভাগ ছিল। একটা ইউরোপীয়দের জন্য। তাহাতে যাহারা গোরা বা শ্বেতাঙ্গ নহে তাহাদের রাখা হইত। জেলার ভারতীয় কয়েদীগণকে কাফ্রিদের সহিত একত্র রাখিতে পারিতেন, কিন্তু তিনি তাহাদের ব্যবস্থা শ্বেতাঙ্গদের বিভাগেই করিয়াছিলেন। কয়েদীদের জন্য ছোট ছোট কুঠুরী,এবং প্রত্যেক কুঠুরীতে ১০।১৫ বা ততোধিক জনের থাকিবার স্থান। সমস্ত জেলখানা পাথর দিয়া তৈয়ারী, কুঠুরীগুলিও উঁচু। দেওয়ালে পেলেস্তারা দেওয়া ছিল, ফরাস সর্ব্বদা ধোয়া হইত, তাই তাহা খুব পরিষ্কার থাকিত। দেওয়ালে অনেকবার চুণকাম করা হইত বলিয়া সর্ব্বদাই নূতন মনে হইত। উঠান কাল পাথরে তৈয়ারী করা হইয়াছিল, তাহাও সর্ব্বদা ধোয়া হইত। উঠানেই ছিল স্নানের ঘর। তিন জনে এক সঙ্গে বসিয়া স্নান করিতে পারে এমন যায়গা সেখানে ছিল। দুইটা পাইখানা ছিল। বসিবার জন্য দুইটা বেঞ্চ। যাহাতে কয়েদী উপরে উঠিতে না পারে সে জন্য কাঁটাওয়ালা তারের জাল উপরে ছিল। প্রত্যেক কুঠুরীতেই বাতাস ও আলো ভাল ভাবে চলাচল করিতে পারিত। সন্ধ্যা ছয়টার