পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কারাকাহিনী।
৪৩

জোহান্সবর্গে বদলী।

 এতক্ষণ বোক‍্সরষ্ট জেলের কথা বলিতেছিলাম, এখন তাহার পরের ঘটনা বলি। আমাকে দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হইয়াছিল, সমস্ত সময়টাই বোক‍্সরষ্ট জেলে কাটাইতে হয় নাই। কিছুদিন পরে হঠাৎ আমাকে জোহান্সবার্গ জেলে লইয়া যাওয়া হইল, সেখানে যাহা ঘটিয়াছিল তাহা উল্লেখযোগ্য। ২৫শে অক্টোবর আমাকে সেখানে লইয়া যাওয়া হইল, কারণ একটি মোকদ্দমায় আমার সাক্ষ্যের প্রয়োজন হয়। আমার মনে হইতেছিল, ইহা ছাড়া অন্য কারণও আছে। আমাদের সকলেরই মনে মনে খুব আশা ছিল, সুতরাং ভাবিলাম,—হয়ত বা মিঃ স্মাট‍্স্ এর সহিত কোনও একটা আলোচনা হইবে। কিন্তু পরে দেখিলাম, সে সব কিছুই নয়। আমাকে লইয়া যাইবার জন্যই জোহান্সবর্গ হইতে এক দাবোগাকে বিশেষ করিয়া পাঠান হয়। আমার ও তার জন্য ট্রেণে একটি কামরা দেওয়া হইয়াছিল। সেকেণ্ডক্লাসের টিকিট ছিল, কারণ সে ট্রেণে থার্ড ক্লাসের গাড়ীই ছিল না। আমি জানিতাম, তৃতীয় শ্রেণীর গাড়ীতেই কয়েদী লইয়া যাওয়া হয়। ট্রেণেও আমার কয়েদীর পোষাক ছিল। আমার জিনিষপত্র আমাকেই বহিয়া নিতে হইল। জেলখানা হইতে ষ্টেশন পর্য্যন্ত হাঁটিয়া যাইতে হইয়াছিল, জোহান্সবার্গে পৌছিলে সেখান হইতে জেল পর্যন্ত বোঝা বহিয়া যাইতে হইল। এই ঘটনায় কাগজে খুব আন্দোলন হয়। পার্লামেণ্টে পর্যন্ত প্রশ্ন উঠে। অনেকেই এ ঘটনায় ব্যথা পাইয়াছিলেন। সকলের মনে হইল, আমার মত রাজনৈতিক কয়েদীকে সাধারণ কয়েদীর পোষাকে লইয়া যাওয়া ও বোঝা বহান অন্যায়।

 যথন মিঃ আঙ্গলিয়া শুনিলেন যে আমাকে এইভাবে যাইতে হইবে, তখন তাঁহার চোখে জল আসিল। এই ঘটনা হইতে তখন বুঝিলাম,