পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৮
কারাকাহিনী।

মনে হয়। যখন আমরা সকলেই ভারতবাসী, তখন এক দিকে মিথ্যা ভেদ রাখিয়া, অন্য দিকে বড় বড় কথা বলিয়া অধিকার চাওয়া কেমন করিয়া সম্ভব? কিম্বা ‘দেশে লোকে কি বলিবে,’ এই ভয়ে সত্যকে যদি ত্যাগ করি, তবে কেমন করিয়া এই বিরোধে জয়ী হইব? ভয়ে কোনও পথ ত্যাগ করা ভীরুর কাজ। কোনও ভীরু ভারতবাসীই সরকারের বিরুদ্ধে এই মহাসংগ্রামে শেষ পর্যন্ত টিকিয়া থাকিতে পারিবে না

 জেলে কাহারা যাইতে পারে? এতেই বোঝা যাইতেছে, ব্যসনগ্রস্ত, মিখ্যা জাতি-ভেদ আচারী, কলহপ্রিয়, অথবা যাহারা হিন্দু মুসলমানের মধ্যে ‘উচ্চ’ 'নীচ' এই ভেদ দেখে, কিম্বা যাহারা রুগ্ন, এমন কেহ জেলে যাইতেই পারিবেন না, গেলেও বেশী দিন সেখানে টিকিতে পারিবেন না। দেশহিতের নামে সম্মান বোধে যাঁহারা জেলে যাইবেন, তাহাদের দেহ, মন, আত্মা, সুস্থ ও সবল হওয়া দরকার। যে ব্যাক্তি রুগ্ন, সে পরিণামে ক্লান্ত হইয়া পড়ে। হিন্দু মুসলমানের মধ্যে উচ্চ নীচ বোধ যাহাদের আছে, যাহারা ব্যসনগ্রস্ত, কলহপ্রিয়, একটুকু চা, বিড়ি কিম্বা অন্য কোনও দ্রব্যের বিনিময়ে যাহারা, নিজেকে বিকাইয়া দিতে পারে, তাহারা শেষ পর্যন্ত সেখানে থাকিতে পারে না।

পড়াশুনা।

 সারাদিন কাজ করিলেও, সকালে, সন্ধ্যায় ও রবিবারে পড়িবার কিছু সময় পাওয়া যায়। জেলে অন্য কোনও ঝঞ্চাট না থাকায় পড়াও বেশ ভাল হয়। খুব অল্প সময় পাওয়া স্বত্ত্বেও রাস্কিনের দুইটি বিখ্যাত গ্রন্থ, থোবোর প্রবন্ধাবলী, বাইবেলের কিছু অংশ, গুজরাতী ভাষায় গারিবল‍‍্ডীর জীবন চরিত ও বেকনের প্রবন্ধাবলী, এবং আরও দুই খানি ইংরেজী পুস্তক