পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৬
কারাকাহিনী।

যাইত। তাহা ছাড়া, দারোগাকেও শত্রু করিতাম। আহারের দুঃখও প্রথমে সহ্য করিয়াছিলাম, নিজের মত চলিয়াছিলাম বলিয়াই পরে আপনা হইতে সব দূর হইল। এমনই ভাব সামান্য সামান্য বিষয়েও এই সত্যাগ্রহ প্রয়োগ করা যাইতে পারে।

 ইহার মধ্যে আমার সব চেয়ে প্রধান লাভ—শারীরিক কষ্ট সহিতে সহিতে মনের বা অনেকখানি বাড়িয়া গেল। এই তিনমাসে অনেক শিক্ষা পাইয়াছি, তাহার বলেই আজ অধিকতর দুঃখ সহ্য করিতে প্রস্তুত হইয়াছি। দেখিতেছি যে ঈশ্বর অনুক্ষণ সত্যাগ্রহীর সহায়, তাই তিনি প্রাণপণ কষ্ট দিয়া সত্যাগ্রহের পরীক্ষা করেন।

কি কি বই পড়িয়াছিলাম।

 আমার সুখ দুঃখের কথা শেষ হইয়াছে। এই তিন মাসে আমার যথেষ্ট লাভ হইয়াছে! সব চেয়ে বড় লাভ,–এই সময়ে পড়াশোনা করিবার খুব সুবিধা মিলিয়াছিল। প্রথম প্রথম অবশ্য নানা কারণে হৃদয় মন অশান্ত হইয়া উঠিত। মন থাকিলেই সর্ব্বদা বানরের মত ছট‍্ফট্ করে। এরূপ অবস্থায় অনেকেই দমিয়া যান। ঠিক এমন সময়ে বইগুলি আমায় বাঁচাইল। ভারতীয় বন্ধুদের অভাব অনেকটা পূরণ করিয়া দিল এই বইগুলি। সর্ব্বদাই প্রায় তিন ঘণ্টা পর্যন্ত পড়িবার সুযোগ পাইতাম। সকালে খাবার খাইতাম না, সুতরাং এক ঘণ্টা অবসর পাইতাম—সে সমস্ত টুকু পড়িতাম। সন্ধ্যাবেলায়ও তাহাই হইত। দ্বিপ্রহরে খাইতে খাইতেই পড়িতাম। সন্ধ্যাবেলায় বিশেষ ক্লান্ত না হইলে বাতী জ্বালিবার পরেও পড়িতাম। শনি রবিবারে ত যথেষ্ট সময় পাইতাম। এই সময়ে প্রায় ত্রিশখানি বই পড়িয়া ফেলি। ইংরেজী, হিন্দী, গুজরাতী, সংস্কৃত ও তামিল