পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৩২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*हबूटली করা, কতবার জ্যোতিন্ময় এই ব্রিজের উপর দিয়া দিনে ও রাত্রে যাতায়াত করিয়াছে, কিন্তু কোনদিন খেয়ালও করে নাই ব্রিজের দু’পাশে নগরের এমন একটা রূপ বিছান রহিয়াছে। অপরাজিতাকে সে যে বিবাহ করিয়াছে, এত কাল এক বিছানায় রাত কাটাইয়াছে, অপরাজিতার মধ্যে নিজের এক প্ৰতিনিধিকে আনিয়া দিয়াছে, তাও কি এতকাল সে খেয়াল করিয়াছিল ? অপরাজিতা যদি মরিয়া যায়। কি হইবে অপরাজিতা মরিয়া গেলে ? ব্রিজের দু’দিকে রেললাইনগুলি এমনিভাবেই পাতা থাকিবে, ইঞ্জিনের হুস হস আর ওয়াগনে ওয়াগনে ঠোকাঠুকির এমনি শব্দ উঠিবে, থামের মাথার জোরালো আলো, সিগন্যালের লাল-নীল আলো, লণ্ঠন নাড়িয়া মানুষের সঙ্কেত কিছুই বদলাইবে না। বাড়ী ফেরার পথে যশোদার সঙ্গে দেখা করিয়া গেল। যশোদা উনানে আঁচ দিয়াছে, আঁচ প্ৰায় ধরিয়া আসিল । ‘কাল চাকরীতে রিজাইন দেব চাদের মা ।” “বেশ তো, রিজাইন দেওয়া তো পালাবে না ? বাড়ী গিয়ে শুয়ে পড়বেন যান ।” অপরাজিত বঁচিবে না আশঙ্কা করিয়াই সত্যপ্রিয় একটু ব্যস্ত হইয়া তাকে বাড়ী পাঠাইয়া দিয়াছিল। কেবল অমঙ্গলের ভয় নয়, তার চেয়ে বেশী ভয় ছিল গোলমালের । এত টাকা খরচ কৰিয়া মেয়ের বিবাহের আয়োজন করিয়াছে, তার মধ্যে এমন একটা উৎপাত কি মানুষের ভাল লাগে ? সে রাত্রে অপরাজিতাৱ প্ৰাণটা বাহির হইবে না জানা থাকিলে হয়ত তাকে সরাইয়া দিবার জন্য অতটা ব্যন্ত श्। अफूिड नi । পরদিন বেলা প্ৰায় এগারটার সময় নিজেই জ্যোতিৰ্ম্ময়ের বাড়ী খবর জানিতে আসিল। এ বড় সহজ সম্মান ও দরদের পরিচয় নয়। জ্যোতিস্ময়ের বৈঠকখানায় অল্প দামী কাঠের চেয়াৱে বসিবার আগে প্ৰথম কথা বলিল এই : “ইস, আপনাৱ চোখ-মুখ যে বসে গেছে জ্যোতিন্ময়বাবু!” জ্যোতিৰ্ম্মময় বলিল, “আজ্ঞে না, ও কিছু নয়।’ অপরাজিতার খবর ? তার অবস্থা বিশেষ ভাল নয়, শেষ পৰ্য্যন্ত কি হইবে বলা যায় না, সে হাসপাতালেই আছে এবং সম্ভবতঃ কিছুদিন থাকিতে হইবে। “আপনি কিছুদিন চুটিনিন জ্যোতিষ্মায়বাবু।” veOC