পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3RGQ)3R शकि द्वौ তখনও খেলা চলিতেছে। সর্ট আর সার্ট পরা রিণিকে যে সে দেখিতে পাইবে রাজকুমার তা কল্পনাও করে নাই। জোরালো কৃত্রিম আলোয় রিণির দ্রুত সঞ্চরণশীল হাল্কা শরীরটি তার চোখে যেন নতুন একটা বিস্ময়ের মত ঠেকিতে লাগিল। প্ৰতিপক্ষ দলের মেয়েটি শাড়ী পরিয়াই খেলিতে নামিয়াছে, মাঝে মাঝে রিণির দিকে চাহিয়া তার ঠোঁটে ফুটিয়া উঠিতেছে মৃদু হাসি । খেলা দেখার জন্য দাড়াইয়া রাজকুমার শেষ পর্যন্ত দেখিয়া গেল শুধু রিণিকে । খেলার শেষে রিণি বলিল, আরেকটু শীত না পড়লে খেলে আরাম নেই। যত শীত পড়ে তত তাড়াতাড়ি ঘাম শুকিয়ে যায় । রাজকুমার বলিল, খেললে ঘাম হয় না। ফ্যাট হয়। আর রাত্রে ভাল ঘুম হয় না। বাড়ী গিয়ে স্নান করলেই ঘুমে চােখ छख्मि आजाद । শরীর সম্বন্ধে রিণির যে এতখানি যত্ন আছে রাজকুমারের জানা ছিল না । স্যার কে,এল-এর জন্য আজ গাড়ীতে রিণির পাশে বসিতে না পারায় তার কেমন যেন ক্ষতি বোধ হইতে থাকে। ব্রিণির গলা পৰ্যন্ত এখন ঢাকা, মুখ ফিরাইয়া কথা বলিতে গিয়া সে আবরণ সে যেন দেখিতে পায় না, টেনিস কোর্টের রিণিই যেন এত কাছে পিছনের সিটে বসিয়াছে মনে হয়। এই দেহাশ্রয়ী জীবটি আহলাদী মেয়ের মত আদরের তাপে গলিতে চায়, শান্ত সুরক্ষিত সংস্কারময় অন্তঃপুরে স্বামী নামে প্রভুর তত্ত্বাবধানে বাস করিবার শুধু সে উপযোগী - এই সিদ্ধান্ত কি সে করিয়াছে এই রিণির সম্বন্ধে ? রাজকুমারের যেন ধাঁধা লাগিয়া যায়। রিণির সাহস আছে, একগুয়োমি আছে, তেজ আছে। এইগুলি সে অর্জন করিয়াছে তার আত্মবিরোধী জীবন যাপনের প্রক্রিয়ায়। রিণিকে সে যদি তার নূতন চিন্তাধারার সন্ধান দেয় ? রিণির কাছে সে যদি তার অসঙ্গত দাবী জানায় ? স্যার কে, এল-এর একটা কথাও রাজকুমারের কানো যায় না, নিজে সে কি বলিতেছে আর রিণি কি জবাব দিতেছে তাও ভাল খেয়াল থাকে না । কথা বন্ধ করিয়া হঠাৎ সে গম্ভীর হইয়া যায়। শান্ত মনে কথাটা বিবেচনা করা দরকার। রিণিকে কিছু বলা না বলার উপর অনেক কিছু নির্ভর করিতেছে, ঝোকের মাথায় কিছু করিয়া বসিলে চলিবে না। রিণি রাগ করিতে পারে, চিরদিনের জন্য তার সঙ্গে সব সম্পর্ক তুলিয়া দিতে পারে, মনে মনে তাকে ঘৃণা করিতে পারে, দুঃখ পাইতে পারে, হাসিয়া উড়াইয়া দিতে