পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিহ্ন grA) ‘বিদ্যালাভে অবহেলা করাও অন্যায়, অন্যায় সহ করাও অন্যায়।” “তবে ? তখন হেমন্ত বুঝেছিল সীতার জ্বালার মর্ম। কিছু না বলেও সীতা তাকে প্রশ্ন করেছে, আজও তুমি নিক্রিয় হয়ে থাকবে তোমার আদর্শবাদী সুবিধাবাদের আত্মকেন্দ্রিক স্বার্থপরতার অজুহাতে ? আজও তুমি এটুকু স্বীকার করবে না যে শিক্ষার্থকেও আজ অন্তত ভাষায় ঘোষণা করতে হবে এ অন্যায়ের দেশব্যাপী প্ৰতিবাদকে সে সমর্থন করে, সেটা রাজনীতি চর্চা হোক বা না হোক ? জবাব দিতেই হবে সীতার এই অনুচ্চারিত প্রশ্নের। গভীর বিষাদ অনুভব করেছিল হেমন্ত । সীতা কি বুঝবে তার কথা ? “আমার কি মুশকিল জান সীতা ?’ হেমন্ত ভূমিকা করেছিল, “আমি সিরিয়াসলি কথা বললেও তুমি সিরিয়াসলি নিতে পার না।” ‘কথা ! তোমার শুধু কথা !? մն “তা ছাড়া কি করার আছে ? প্ৰতিবাদ যে জানানো হবে, তাও তো কথাতেই ? তখন কি হেমন্ত জানত মৰ্মে মৰ্মে উপলব্ধি করা কথা কত সহজে কি আনিবাৰ্যভাবে কাজে রূপান্তরিত হতে পারে : কণ্ঠের প্রতিবাদ পরিণত হতে পারে জীবনপণ ক্রিয়ায় । সীতা চুপ করে থাকায় আবার সে বলেছিল, ‘কথাকে অত তুচ্ছ করো না সীতা । মানুষ বোবা হলে পৃথিবীটা অন্য রকম হত। ও-সব বড় দার্শনিক কথায় যাব না। আমার কথাটা মন দিয়ে শুনবে কি শান্ত হয়ে ? তুমি তো জানো, আমি যা বলি তাই করি। কথার প্যাচও কষি না, ফাকিবাজী কথাও বলি না ।” “শুনি তোমার কথা ।” “তুমি কি বুঝবে আমার কথা ? ‘পারবে বুঝিয়ে দিতে ? অতি বিশ্ৰী, অতি নীরস নীরবতা এসেছিল কিছুক্ষণের । সাহস সঞ্চয় করে হেমন্ত বলেছিল তারপর, “অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে নিশ্চয়, কিন্তু তারও তো নিয়ম আছে, যুক্তি আছে? ধরে তুমি আমার সঙ্গে আছ, কেউ তোমায় অপমান করল। তখন সোজাসুজি ঘুষি মেরেই আমি সে অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাব।” সে এক পুরানো ঘটনা। আজকের ব্যক্তিব্য বুঝিয়ে দেবার জন্য তার সেই