পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ဓုကျိရ “জানতাম, আজ খটকা লাগছে। সখা করে নিজেকে কষ্ট দিচ্ছি মানে ? সব আমি ছেড়ে দিয়ে আসছি, এ হল আমার সখি ! এরকম সখা কটা মেয়ের মধ্যে তুমি দেখেছ কেষ্টদা ? সখি দুদিনে মিটে যাবে। তুমি বুঝি তাই ভাবিছ ? ভাবিছ আমি পারব না ? সখি মিটে গেলে ফিরে যাব ? কি ধারণা তোমার আমার সম্বন্ধে। সুপ্ৰভা, কুন্তলা, কল্যাণী এরা যা পারছে, আমি তা পারব না।” ‘তুমি পারবে না বলি নি। কি ভাবে পারবে সেটাই ঠাডরে উঠতে পারছি না । সুপ্ৰভার যতটা পারে ততটা করছে—আনন্দের সঙ্গে করছে । ওদের সব সময় নিজের সঙ্গে লড়াই করতে হয় না । নিজেকে পীড়ন করার দরকার হয় না। তুমি ওদের মত সহজভাবে স্বচ্ছন্দে কাজ করতে পারবে না মমু, যতই চেষ্টা কর। হয় তুমি ওদের ছাড়িয়ে অনেক ওপরে উঠে যাবে, অসাধারণ কাজ করবে, নয় তোমার কাজের বিশেষ কোন মূল্য থাকবে না, জিদের বশে মনের জোরে কোন মতে নিজেকে টেনে নিয়ে যাবে। আদর্শের জন্য হঠাৎ ত্যাগ করা আর আদর্শের জন্য হাসি মুখে দিনের পর দিন খেটে যাওয়া ভিন্ন জিনিস। ত্যাগ করলেই যে কাজও করা যাবে এমন কোন মানে নেই। ত্যাগের দুঃখ বরণ করা যায়, সওয়া যায়। মনে দুঃখ নিয়ে কাজ করা যায় কি ? কাজ করে সুখ পাওয়া চাই—আনন্দ থাকা চাই, উৎসাহ থাকি চাই কাজের পিছনে ৷” “হীরেনের জন্য খুব কষ্ট হবে। সত্যি কিন্তু-” “শুধু হীরেনের জন্য নয়। ও দুঃখের কথা বলি নি। এ দুঃখ তো কাজের আনন্দই বাড়ায়—কাজটাই অবলম্বন হয়ে দাড়ায় মানুষের-অবশ্য যদি কাজের দিকে মন যায়। আমি বলছি নতুন জীবনের দুঃখ কষ্টের কথা । তোমার হয় তো ভাল লাগবে না, তবু তোমাকে জোর করে চালিয়ে যেতে হবে। তখন তোমাকে দিয়ে যেটুকু কাজ হবে, যে কেউ তা পারবে।” “ভাল লাগবে না ? এতদিন যা করছি তা ভাল লাগবে না ?” "এতদিন যে একভাবে করেছ। এখন অন্যভাবে করতে চাইছ।” ‘অন্যভাবে মানে ? 'মানে ? এই যেমন ধর, কানুর ছেলে আর বৌটার বসন্ত হয়েছে শুনে ছুটে দেখতে গিয়েছিলে, নিজে দাড়িয়ে থেকে টাকা দিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে এসেছিলোঁ। তুমি চাইছ। এবার থেকে ও অবস্থায় শুধু ওইটুকু না করে একেবারে শিয়রে বসে সেবা করবে।’ Nà Rà