পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহরবাসের ইতিকথা “কি বলছি, লীলা নয়। লাবু তোমার খোজ করছিল।” প্ৰত্যেক মানুষকে জীবনে মাঝে মাঝে নিজের মৃত্যু কামনা করিতে হয়। ঝরণার মুখ লাল দেখায় মোহনের প্রতিফলিত অপমৃত্যুর মত। “বলুন গে’ যাচ্ছি।” ঝরণা নীরবে চলিয়া গেলে মোহনকে মনে মনে মরিয়াই থাকিতে হইত, মড়ার উপর খাড়ার ঘা দেওয়ার অতি মন্দ আর বিপজ্জনক কৰ্ত্তব্য করার গৌরবে আহত সৈন্যের মত মোহন জীবন্ত হইয়া উঠিল । A. এত যখন তেজ ঝরণার, ওকে আরও অপমান করা চলে। আরও অপমান করাই কৰ্ত্তব্য । “একটু দেখা শোনা করবি যা নগেন ? তোর সত্যি কাণ্ডজ্ঞান নেই। এক কতদিক সামলাব ? “যাই।” “যাই নয়, যাও।” দু’জনেই গেল, আগে নগেন, তার পিছু পিছু ঝরণা। একটা সিগারেট বাহির করিয়া মুখে গুজিতে গিয়া মোহন দেখিল, আঙ্গুলগুলি তার থরথর করিয়া কঁাপিতেছে । ‘কাঠিটা দাও তো বাবা, নিভিও না।” “আপনার দেশলাই নেই ? বাক্সট তবে রেখে দিন ।” তাম্বর বিড়ি ধরাইয়া বলিল, “দেশলাই আছে। তুমি কাঠিটা ধরলে তাই 656श ञिक्लिश ।।' দিয়াশলাই-এর একটা কাঠিও অপচয় করে না, মানুষটা হিসাবী বটে। মোহনের বাবারও এই রকম হিসাব ছিল, উনানে জ্বলন্ত কয়লা থাকিতে দেশলাই জালিয়া টিকা ধরাইয়া তামাক দিলে আর রক্ষা থাকিত না । হিসাবের আটঘটি বাধা তার দীর্ঘজীবন এক মুহুৰ্ত্তের অসতর্কতায় বাসের নীচে সমাপ্তি পাইয়াছে। মনে মনে পয়সার হিসাব কষিতে কষিতেই হয়তো তিনি অন্যমনস্ক হইয়া গিয়াছিলেন, হয়তো ভাবিতেছিলেন, হাটিবেন অথবা বাসে উঠিয়া কটা পয়সা খরচ করিবেন। কলিকাতা আসিয়াছিলেন তিনি বাজার করিতে, জিনিস কিনিয়াছিলেন কয়েকশ' টাকার। তার মধ্যে র্তার নিজের জন্য ছিল একটি চটি, দু’জোড়া কাপড় V8V