পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্রন্থাবলী শিউশরণের ভজন থামার পর চোখে প্ৰায় ঘুম নেমে এসেছে। রাণীর, সরযুর ভৎসনা শুনে সে সজাগ হয়ে ওঠে । ‘ইয়ে কা জবরদস্তি ? সরাম নাহি তুমারা ?” “চোপরও !” প্ৰচণ্ড চড়ের শব্দে রাণী নাকি চমকে যায়। ভাবে, সরযুকি শেষে চড় পৰ্যন্ত মেরে বসল স্বামীর গালে ? সরযুর কান্না কাণে আসতে সে বুঝতে পারে, না, শিউশরণই বিদ্রোহ করেছে। ‘মাগী যেন কি, না রাস্তান্দি ? রম্ভ আসল খবর জানে। রাণীর মত সস্তা। মজা পাওয়ার বদলে মনটা তার খারাপ তয়ে যায়। সরযু একটু উচু বংশের মেয়ে শিউশরণের চেয়ে । টাকার জোরে শিউশরণ তাকে বিয়ে করে এনেছে। প্রায় সত্তর টাকা বেশী খরচ করে। শিউশরণের স্পর্শ এখনো অপমান বোধ হয় সরযুর, বিতৃষ্ণ জাগে । রম্ভ নিশ্বাস ফেলে ভাবে, বয়সটা শিউশরণের কম হলেও হয় তো নিজেকে খাপ খাইয়ে নেওয়া সহজ হত সরযুর পক্ষে। অপস্থান, নর্দমা ও পচা আবর্জনার দুৰ্গন্ধ-কলতলায় জলের জন্য, ছেলেমেয়ের ঝগড়ার জন্য, বেসামাল মেয়েমানুষের দিকে পুরুষের একটু তাকানোর জন্য, নিছক হিংসার জন্য আর শুধু ঝগড়াটে স্বভাবের জন্য কোন্দল, পরস্পরের বঁাচনমরণে ব্যঙ্গাত্মক উদাসীনতা আর ছলচাতুরী হীনতা দীনতা নিৰ্ম্মম পাশবিকতায় বিষাক্ত তার এই নূতন আবেষ্টনীতে ও মায়া মমতা উদারতা, আত্মনাশী নির্বাক সহিষ্ণুতা আর মহত্তর বৃহত্তর কিছুর কামনা খুজে খুঁজে আবিষ্কার করে রম্ভ আত্মরক্ষা করে। রম্ভা যখন প্ৰথম জেনেছিল তাদের পাশের বাড়ীর পরের বাড়ীতে সাতটি মেয়ে থাকে-কেউ কেউ নিজের মা কিম্বা ভায়ের সঙ্গেই থাকে-যে সাতটি মেয়ের যে কোনো একজনকে যে কোন পুরুষ এসে একটি টাকা দিয়ে সম্ভোগ করে যেতে পারে, রম্ভার মাথা ঘুরে গিয়েছিল। পাগলের মত সে রামপালকে বলেছিল, আমায় নিয়ে চলো-অন্য কোথাও নিয়ে চল। আমি মরে যাব Lልማiርማ qiቐርማ ! তাকে বুঝিয়েছিল দুৰ্গা । V9R