বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:মুর্শিদাবাদ কাহিনী.djvu/২৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
কাস্তবাবু
২৭১


প্রকৃত মাতা বলিয়া জানিত, য়াঁহার অজস্র করুণাধারা স্তন্যদুগ্ধের ন্যায় ক্ষরিত হইয়৷ এতদিন তাহাদিগকে স্নিগ্ধ করিয়াছে, আজ কোন্ প্রাণে তাহারা তাহ হইতে বিচ্যুত হইতে ইচ্ছা করিবে? কিন্তু দুঃখের বিষয় এবং তাহদের দুর্ভাগ্যের বিষয় এই যে, দেশের শাসনকর্তাই বলপূর্বক তাহাদিগকে সে সুখভোগ হইতে বঞ্চিত করিতেছেন। সমস্ত প্রজাবর্গ যখন জানিতে পারিল যে, বাস্তবিকই তাহার রানী ভবানীর হস্ত হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়াছে, তখন তাহারা দলবদ্ধ হইয়া, কর-প্রদানে অসম্মতি জানাইতে লাগিল। কান্তবাবু অত্যন্ত বিপদে পতিত হইলেন। তাঁহার পক্ষে সরকারের রাজস্ব দেওয়া ভার হইয়া উঠিল। যদিও অন্যান্য লোকের সহিত তুলনায় তাহার রাজস্ব অতি সামান্যমাত্র ছিল, তথাপি কর আদায় না হওয়ায়, তিনি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হইয়া উঠিলেন। প্রজারা মধ্যে মধ্যে যাহা কিছু প্রদান করিত, তাহাতে কোন প্রকারে রাজস্বের সংকুলান হইত। কিন্তু ইহাতে বিশেষ কোন লাভ হইত না। তাহাকে অনেক দিন পর্যন্ত এই কষ্ট ভোগ করিতে হয়। অবশেষে তিনি হেস্টিংসসাহেবকে সমস্ত জানাইলে, হেস্টিংস তাঁহার সুবিধা করিয়া দেন। ১৭৮৩ খ্রীঃ অব্দে বখন কান্তবাবু বাহারবন্দ-পরিদর্শনে নিজে গমন করেন, সেই সময়ে (১৭৮৩ খ্রীঃ অব্দের ৯ই ফেব্রুয়ারি) হেস্টিংস রঙ্গপুরের কালেক্টর গুডল্যাডসাহেবকে এই মর্মে লিখিয়া পাঠান, “আমার দেওয়ান কান্তবাবু আমার অনুমতিক্লমে তাঁহার জমিদারী বাহারবন্দ দেখিতে যাইতেছেন। সেখানকার বিদ্রোহী প্রজাদিগকে দমন করিবার জন্য কান্তবাবুকে সাহায্য করিবে এবং এখন, যখন খাজনা আদায়ের সময়, তখন লাগাদ বৈশাখ প্রজাদিগের কোন অভিযোগ আপত্তি শুনিবে না। তাহাতে কান্তের ক্ষতি হইতে পারে, বৈশাখ মাসে শুনিলে তাহার বিশেষ ক্ষতি হইবে না।” ১২

  গুডল্যাডসাহেব হেস্টিংসের আজ্ঞাপ্রতিপালনে ত্রুটি করেন নাই। আজিও তাঁহার নাম রঙ্গপুর অঞ্চলে প্রবাদবাক্যের ন্যায় প্রচলিত রহিয়াছে। দেবীসিংহ এই

 ১২ “Kanto Babu my Dewan, having obtained my permission to visit the pargona of Baharbund which is his zemindari, the ryots of which have proved very refractory in paying their rents, I request that you will afford him your protection and support in collecting the same, enforcing his authority and that of his agent or agents whom he may leave in the management. In the meantime as this is the season of the heavy collections, and as he expects, as the natural consequence of his endeavours, to realise them and reduce the ryots to their duty, that they will appeal and complain to you, be requests, and it is reasonable, that you will suspend- any inquiry therein until the month Baisak, at which time his business will suffer little from it.” (Calcutta Review, 1878. W. H. in Lower Bengal.)