পাতা:মৃণালিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
লুব্ধ।
৪৫

সাক্ষাৎ পাইলাম না, শুনিলাম তিনি সন্ধ্যাকালে নবদ্বীপ যাত্রা করিয়াছেন।”

 মৃ। “নবদ্বীপ?”

 গি। “নবদ্বীপ।”

 মৃ। “সন্ধ্যাকালেই?”

 গি। “সন্ধ্যাকালেই। শুনিলাম তাঁহার গুরু আসিয়া তাঁহাকে সঙ্গে করিয়া লইয়া গিয়াছেন।”

 মৃ। “মাধবাচার্য! মাধবাচার্যই আমার কালস্বরূপ।” পরে অনেকক্ষণ চিন্তা করিয়া মৃণালিনী কহিলেন, “গিরিজায়ে, তুমি বিদায় হও। অধিককাল আমি গৃহের বাহিরে থাকিব না।”

 গিরিজায়া কহিল, “আমি চলিলাম। এই বলিয়া গিরিজায়া বিদায় হইল। তাহার মৃদু মৃদু গীতধ্বনি শুনিতে শুনিতে মৃণালিনী গৃহমধ্যে পুনঃ প্রবেশ করিলেন।

 মৃণালিনী বাটীর মধ্যে প্রবেশ করিয়া যেমন দ্বার রুদ্ধ করিবার উদ্যোগ করিতেছিলেন, অমনি পশ্চাৎ হইতে কে আসিয়া তাঁহার হস্ত ধারণ করিল। মৃণালিনী চমকিয়া উঠিলেন। হস্ত রোধকারী কহিল,

 “তবে সাধ্বি! এই বার জালে পড়িয়াছ। এ গুপ্ত প্রসাদভোজী কে শুনিতে পাই না।”

 মৃণালিনী তখন ক্রোধে কম্পিত হইয়া কহিলেন, “ব্যোমকেশ! ব্রাহ্মণকুলে পাষণ্ড! হস্ত ত্যাগ কর।”

 ব্যোমকেশ হৃষীকেশের পুত্র। এ ব্যক্তি ঘোরমূর্খ, এবং দুশ্চরিত্র। সে মৃণালিনীর প্রতি বিশেষ অনুরক্ত হইয়াছিল, এবং স্বাভিলাষ পূরণের অন্য কোন সম্ভাবনা নাই জানিয়া বলপ্রকাশে কৃতসঙ্কল্প হইয়াছিল। কিন্তু মৃণালিনী মণিমালিনীর