করিতে যেরূপ নিপুণ, যুদ্ধ, বিস্ময়, পর্ব্বত ও সমুদ্র প্রভৃতির বর্ণনাতে সেরূপ নিপুণ নহেন। মেঘনাদকার এ বিষয়ে তাহাদের সকলের অপেক্ষা প্রাধান্য লাভ করিযাছেন। বোধ হয়, বঙ্গীয় কবিগণের মধ্যে কি প্রাচীন কি আধুনিক কেহই বীর ও রৌদ্ররসের বর্ণনা বিষয়ে তাঁহার ন্যায় ক্ষমতাশালী নহেন।
মেঘনাদের ভাষা সম্বন্ধে বাঙ্গালি সাহিত্য সমাজে অতিশয় মত ভেদ লক্ষিত হইতেছে, যদি তাঁহাদের সহিত আমার ক্ষুদ্র মতের অনৈক্য ঘটে, তবে তাঁহারা অনুগ্রহ করিয়া আমাকে ক্ষমা করিবেন।
মেঘনাদের ন্যায় বীর রসাশ্রিত কাব্যে ভাষার সুপরিস্ফুটতা ও সুগভীরতা থাকা আবশ্যক। মেঘনাদের ভাষা শেষোক্তগুণে যেরূপ ভূষিত, প্রথমোক্ত গুণে সেরূপ হয় নাই। মেঘনাদের কোন কোন স্থলের অর্থ সহজে বোধগম্য হয় না; সুতরাং সেই সেই স্থল প্রসাদগুণ সম্পন্ন নহে। নিম্নে উহার একটী উদাহরণ প্রদর্শিত হইতেছে।
কামদেব ভগবতীর রূপ বর্ণনা করিবার সময়ে কহিতেছেন।
মলম্বা অম্বরে তাম্র এর শোভা যদি
ধরে, দেবি, ভাবি দেখ বিশুদ্ধ কাঞ্চন
কান্তি কত মনোহর!”