সধবা, নয় বিধবা-কি মতলবে চুটিয়ে পীরিত কর্ছিলি বল্ ত? বিয়ে করবি বলে, না ভুলিয়ে নিয়ে লম্বা দিবি বলে?
ভারি একটা হাসি উঠিল। তার পর সকলে মিলিয়া কত কথাই বলিতে লাগিল।
সত্য একটিবার মুখও তুলিল না, একটা কথার জবাব দিল না। সে মনে কি ভাবিতেছিল, তাহা বলিবই বা কি করিয়া, আর বলিলে বুঝিবেই বা কে? থাক্ সে।
বিজ্লী সহসা চকিত হইয়া উঠিয়া দাঁড়াইয়া বলিল, বাঃ, বেশ ত আমি! যা ক্ষ্যামা, শিগ্গির যা-বাবুর খাবার নিয়ে আয়, স্নান করে এসেচেন-বাঃ, আমি কেবল তামাসাই কচ্চি যে! বলিতে বলিতেই তাহার অনতিকাল পূর্বের ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ-বহৃতপ্ত কণ্ঠস্বর অকৃত্রিম সস্নেহ অনুতাপে যথার্থ-ই জুড়াইয়া গেল।
খানিক পরে দাসী একথালা খাবার আনিয়া হাজির করিল। বিজ্লী নিজের হাতে লইয়া আবার হাঁটু গাড়িয়া বসিয়া বলিল, মুখ তোল, খাও।
এতক্ষণ সত্য তাহার সমস্ত শক্তি এক করিয়া নিজেকে সামলাইতে - ছিল, এইবার মুখ তুলিয়া শান্তভাবে বলিল, আমি খাব না।
কেন? জাত যাবে? আমি হাড়ি না মুচি?
সত্য তেমনি শান্তকণ্ঠে বলিল, তা হলে খেতুম। আপনি যা তাই।
বিজ্লী খিল্খিল্ করিয়া হাসিয়া বলিল, হাবুবাবুও ছুরি-ছোরা চালাতে জানেন দেখচি! বলিয়া আবার হাসিল, কিন্তু তাহা শব্দমাত্র, হাসি নয়, তাই আর কেহ সে হাসিতে যোগ দিতে পারিল না।
সত্য কহিল, আমার নাম সত্য, হাবু নয়। আমি ছুরি-ছোরা চালাতে কখন শিখিনি, কিন্তু নিজের ভুল টের পেলে শোধরাতে শিখেচি।
বিজ্লী হঠাৎ কি কথা বলিতে গেল, কিন্তু চাপিয়া লইয়া শেষে কহিল, আমার ছোঁয়া খাবে না?
৫৫