পাতা:মেদিনীপুরের ইতিহাস প্রথম ভাগ.djvu/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

দ্বিতীয় অধ্যায়।

প্রাকৃতিক বিবরণ ও ভূ-বৃত্তান্ত।


 ভূতত্ত্ববিৎ পণ্ডিতগণ স্থির করিয়াছেন, একসময় রাজমহল-পর্ব্বতমালা বঙ্গোপসাগরের উত্তরসীমা ছিল। পরে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রেরপ্রাকৃতিক বিপর্য্যয়। মুখানীত কর্দ্দমে পুষ্ট হইয়া বর্ত্তমান নিম্ন-বঙ্গের সৃষ্টি হইয়াছে। সে সুদূর অতীতকালের কথা। সে যুগের কথা ছাড়িয়া দিলেও ঐতিহাসিক যুগের যে সময় হইতে এইপ্রদেশের বিবরণ সংগ্রহ করিতে পারা যায়, সেই সময় হইতে ইহার ভূমি-প্রকৃতির আলোচনা করিলে পরিলক্ষিত হয় যে, যুগে যুগে এই প্রদেশের কিছু কিছু পরিবর্ত্তন সংঘটিত হইয়াছে।

 এই জেলার পূর্ব্বপ্রান্তে রূপনারায়ণ নদীর তীরে এক্ষণে তমলুক নামে যে নগরটি বর্ত্তমান, পণ্ডিতগণ সিদ্ধান্ত করিয়াছেন, উহাই প্রাচীন কালের তাম্রলিপ্তনাম্নী মহানগরী। মহাভারত, পুরাণ, সংহিতা প্রভৃতি পাঠে জানা যায়, তৎকালে এই নগরটি সমুদ্রতীরে অবস্থিত ছিল; এই জন্য ইহার একটি নাম “বেলাকূল”। শব্দকল্পদ্রুমে এই বেলাকূল শব্দের অর্থে লিখিত আছে—“বেলাকূলং (ক্লীং) তাম্রলিপ্তদেশঃ।” বৌদ্ধগ্রন্থ মহাবংশ ও গ্রীক রাজদূত মেগাস্থিনিসের ভ্রমণবৃত্তান্ত হইতেও জানা যায় যে, খৃষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে তাম্রলিপ্ত নগর সমুদ্রকুলবর্ত্তী বন্দর বলিয়া বিখ্যাত ছিল। মহাসমুদ্র তখন তাম্রলিপ্তের