ֆՀԵ যশোহর-খুলনার ইতিহাস অধিনায়ক ছিলেন ; পরে ক্রমশঃ তাহাকে আরও দায়িত্বপূর্ণ উচ্চপদে উন্নীত করা হয়। প্রায়ই র্তাহাকে এক একটি প্রধান দুর্গে অধীশ্বর করিয়া রাখা হইত। আমরা পরে দেখিতে পাইব, তাহার নামানুসারে- একটি প্রসিদ্ধ ঘর্গের নাম হইয়াছিল–গড় কমলপুর। তাহার উপর গ্রতাপের অগাধ বিশ্বাস ছিল এবং তিনিও চিরদিন সে বিশ্বাস অক্ষুণ্ণ রাখিয়াছিলেন। রাজ্যারোহণের পর প্রতাপাদিত্য যখন ধূমঘাটে নূতন দুর্গ নিৰ্ম্মাণ করিলেন, তখন তাহার প্রধান ভার কমল থোজার উপর অর্পিত হইল। যমুনা ও ইছামতীর সঙ্গম স্থলের দক্ষিণ দিকে অনতিদূরে এই বিস্তীর্ণ মৃন্ময় দুর্গ নির্মিত হইয়াছিল। যমুনা ও ইছামতী উহার উত্তর ও পূৰ্ব্বদিক বেষ্টন করিয়া থাকিল এবং দক্ষিণ দিকে ইছামতী হইতে হানরখালি নামে একটি খাল খনিত হইল এবং পশ্চিমদিকে হানরখালি হইতে কামারখালি নামক অন্ত একটি খনিত খাল বাহির হইয়া যমুনায় মিশিল । এই ভাবে ইহার বাহিরের গড়খাই হইল । ভিতরে চারিদিকে বিস্তৃত পরিখা কাটিয়া মৃত্তিক স্তুপীকৃত করিয়া বেষ্টন প্রাচীর প্রস্তুত হইল; উহারই মধ্যে সৈন্তাবাসের জন্ত ইষ্টক ও কাষ্ঠনির্মিত গৃহসকল প্রস্তুত করা হইল। পূৰ্ব্বদিকে উহার সদর তোরণ হইল। সেই দ্বারের পাশ্বে দুর্গাধ্যক্ষের আবাস স্থান ছিল। কমলখোজ দিবারাত্রি সেইস্থানে থাকিয়া দুর্গ নিৰ্ম্মাণের তত্বাবধান করিতেন। গভীর নিশীথেও তিনি প্রহরীর মত এই পূৰ্ব্বারে বসিয়া থাকিতেন। সেস্থান হইতে দক্ষিণ দিকে তখনও ভীষণ অরণ্য ছিল। প্রবাদ এষ্ট, ঐ অরণ্যের মধ্যে গভীর তমসাচ্ছন্ন রাত্রিতে তিনি এক স্থান হইতে অগ্নিশিখা উঠিতেছে দেখিতে পাইতেন। দুর্গের পূৰ্ব্বোত্তর কোণে ইছামতী বা কদমতলীর উপর একটি খেয়াঘাট হইয়াছিল। সেই ঘাটের মালিক যশ পাটনীও *রাত্রিকালে জঙ্গলের মধ্যে ঐক্লপ অগ্নিশিখা দেথিত । ক্রমে এই কথা যখন প্রতাপের কর্ণে উঠিল, তখন তিনি জঙ্গল কাটিয়া উহার কারণ অনুসন্ধান করিবার আদেশ দিলেন। এই অগ্নিশিখায় কেহ বিশ্বাস করুন বা ন করুন, দুর্গের সাগ্নিধ্যে রাজধানীর সহর প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন হইয়াছিল। জঙ্গল কাটিয়া স্থান পরিষ্কৃত হইলে, তন্মধ্যে স্তুপীকৃত ইষ্টকাদির ভগ্নাবশেষের নিয়ে যশোরেশ্বরী দেবীর পাষাণময়ী মূৰ্ত্তি আবিষ্কৃত হইল। পরিষ্কৃত হইলে দেখা গেল, সে অতীব কৃষ্ণবর্ণ বা কষ্টিপাথরে নিৰ্ম্মিত ভয়ঙ্করী কালীমূৰ্ত্তি। বাস্তবিকই ভয়ঙ্করী মুক্তি। মুক্তি অনেক দেখিয়াছি,
পাতা:যশোহর-খুল্নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৬২
অবয়ব