পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস প্রথম খণ্ড.djvu/১৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বাদশ পরিচ্ছেদ–জঙ্গলা ভাষা - পৃষ্ঠা ১১৩

ভাণ্ডার বৃদ্ধি করে। জঙ্গলা ভাষা না জানিলে দক্ষিণদেশীয় ব্যাপারদিগের কথোপকথনের এক বর্ণও বুঝা যায় না। সুতরাং ফরেষ্ট বা পুলিস বিভাগের কৰ্ম্মচারিগণের এ ভাষার সহিত পরিচিত হওয়া একান্ত আবশ্যক হইয়া পড়ে। সুন্দরবন অনেকবার উঠিয়া পড়িয়াছে, আবার পড়িয়া উঠিবে। এখনও পূৰ্ব্বতন বাসচিহ্ন লুপ্ত হয় নাই, অনেক বনভূমি ধান্যক্ষেত্রে পরিণত হইতেছে এবং নিকটে নিকটে মানুষের বসতি হইতেছে। নানা স্থানে কীৰ্ত্তিচিহ্ন আবিষ্কৃত হইতেছে, বঙ্গদেশেও প্রত্নতত্ত্বের পিপাসা জাগিয়াছে। এ পুস্তকেও উহার কতকটা নিদর্শন থাকিবে। তজ্জন্য লোকসমাজে সে সব কীৰ্ত্তিকথা প্রচারিত হইলে, এ অঞ্চলে ঐতিহাসিকের শুভাগমন সম্ভাবিত হইবে। সুন্দরবনের স্বাভাবিক অবস্থার পরিচয় বিজ্ঞাপিত হইলে, সাধারণ দর্শক বা শিকারীরও অভাব হইবে না। সাধারণের কতক সুবিধা এবং অন্ততঃ দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আমরা সাধ্যমত জঙ্গল ভাষার কতকগুলি শব্দার্থ সংগ্ৰহ করিলাম ।

দ্বাদশ পরিচ্ছেদ–জঙ্গলা ভাষা

  • আইট বা আট - বনের মধ্যে পূৰ্ব্বতন বসতির চিহ্নযুক্ত উচ্চ জমি।
  • আদলদার - পূৰ্ব্বে লবণ প্রস্তুত হইয়া রাশীকৃত হইলে, তাহার উপর যাহারা ছাপ মারিয়া দিত।
  • আবাদ - জঙ্গলকে “বাদা” বলে, এবং জঙ্গল উঠিত হইয়া যখন ধান্যক্ষেত্রে পরিণত হয়, তখন তাহার নাম আবাদ।
  • আফালি — আস্ফালন। মৎস্যের আফালি।
  • উশকাড়া - মৎস্যে জলের ভিতর হইতে বাহির হইয়া আবার ঢুকিয়া যায়, উহাকে উশকাড়া বলে।
  • ওত - শিকারের জন্য প্রস্তুত অবস্থা বাঘে জঙ্গলের মধ্যে ‘ওত পাতিয়া বসিয়া থাকে।
  • ওঝা - মন্ত্ৰবিৎ ব্যক্তি। উপাধ্যায় শব্দের অপভ্রংশ।
  • কল - বাঁধের মধ্য দিয়া জল নিষ্কাশনের প্রণালী।
  • কাগজী - যাহারা পূর্ব্বে কাগজ প্রস্তুত করিত, তাহাজের কাগজী উপাধি হইত।