পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

গত শতাব্দীতেই। আরো অনেক নাম করা যায়, কিন্তু আপাততঃ নামের ফর্দ আর বাড়িয়ে কাজ নেই; কারণ পরে যথাসময়েই আমাদের চিত্রশালায় আপনারা তাঁদের ছবি দেখতে পাবেন।


 ছেলেবেলা থেকেই সাহিত্যের মৌতাত আমাকে একেবারে পেয়ে বসেছিল। যৌবনোন্মেষের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ীর বাইরে যখন পদচালনা করবার স্বাধীনতা অর্জন করলুম, তখন বড় বড় সাহিত্যিক ও শিল্পীর সঙ্গে পরিচিত হবার সুযোগ পেলেই নিজেকে মনে করতুম সব চেয়ে ভাগ্যবান। বিশ বৎসর বয়স পার হবার আগেই রবীন্দ্রনাথ, গিরিশচন্দ্র, দ্বিজেন্দ্রলাল, অবনীন্দ্রনাথ, গগনেন্দ্রনাথ, দেবেন্দ্রনাথ সেন, অক্ষয়কুমার বড়াল, সুধীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সুরেশচন্দ্র সমাজপতি থেকে আরম্ভ ক’রে তখনকার অধিকাংশ প্রসিদ্ধ ব্যক্তির কাছে বার বার ধর্না দিয়ে এসেছি এবং তখনকার যে সব নবীন লেখক পরে অসামান্য খ্যাতি অর্জন করেছেন, তাঁদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক পাতিয়ে ফেলেছি— যেমন সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, যতীন্দ্রমোহন বাগচী, করুণানিধান বন্দ্যোপাধ্যায়, মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায়, চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রেমাঙ্কুর আতর্থী ও মোহিতলাল মজুমদার প্রভৃতি।

 সকলকার কাছ থেকেই লাভ করতুম সাদর ব্যবহার, কিন্তু মুস্কিলে পড়েছিলুম একবার। স্বর্গীয় দীনেন্দ্রকুমার রায়ের তখন বেশ নাম। প্রধান প্রধান মাসিকপত্রে তিনি লিখতেন, শিশুদের সাহিত্যেও তাঁর হাত ছিল মিষ্ট। কিন্তু আমাকে সব চেয়ে আকৃষ্ট করত তাঁর পল্লীচিত্রগুলি। বাংলার পল্লী নিয়ে তেমন কলমের ছবি আজ পর্যন্ত আর কেউ আঁকতে পারেন নি। শ্রদ্ধাপূর্ণ মন নিয়ে একদিন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলুম। আমার বয়স তখন

১০