পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পাঁচ

 রবীন্দ্র-প্রতিভা বিশেষ ভাবে বিকশিত হবার পরে যে কয়জন শক্তিধর সাহিত্য-শিল্পী বাঙালীদের সাগ্রহ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে অগ্রগণ্য হচ্ছেন দ্বিজেন্দ্রলাল রায়।

 বাংলা ভাষায় হাসির গান হচ্ছে তাঁর অপূর্ব সৃষ্টি। তাঁর আগেও এখানে হাসির গান ও কবিতার অস্তিত্ব ছিল বটে, কিন্তু দ্বিজেন্দ্রলালের প্রতিভাই ও-দুটি বস্তুকে উচ্চ-সাহিত্যে উন্নীত করতে পেরেছে। তাঁর ঐ শ্রেণীর গানে বা কবিতায় যে-সব মিলের বিস্ময়, যেমন শব্দ নিয়ে খেলা, অভিনব ছন্দের লীলা ও বিচিত্র প্রয়োগনৈপুণ্য দেখা যায়, অন্যত্র তা দুর্লভ। সাধারণ সঙ্গীত রচনাতেও রবীন্দ্রনাথ ছাড়া বাংলাদেশে আর কেউ তাঁর চেয়ে বেশী অগ্রসর হ’তে পারেন নি। তাঁর দেশপ্রেমের গানও সারা বাংলাকে মাতিয়ে তুলেছিল। তাঁর রচিত “ধন-ধান্য-পুষ্পভরা” ও “বঙ্গ আমার, জননী আমার” প্রভৃতি সঙ্গীতের তুলনা নেই। রবীন্দ্রনাথের মত তিনিও নিজের গানে নিজেই নিপুণ ভাবে সুর সংযোজনা করতে পারতেন। তাঁর কবিতাগুলিও নূতনত্বে ও স্বকীয় বিশেষত্বে অপূর্ব। গদ্য প্রবন্ধ রচনাতেও তিনি যথেষ্ট মুন্সিয়ানা প্রকাশ ক’রে গিয়েছেন।

 কিন্তু তিনি জনতার হৃদয় হরণ করেছিলেন নাটক রচনার দ্বারা। নাট্য-সাহিত্যে হাত না দিলে তিনি এতটা জনপ্রিয় হ’তে পারতেন কিনা সন্দেহ। তাঁর নাটকাবলীর মধ্যে সাধারণ ত্রুটিবিচ্যুতির অভাব নেই বটে, কিন্তু নাট্যকারের পুরুষোচিত জোরালো

৪৩