পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

মহারাজার অনুরোধে তিনি “মর্মবাণী”র জন্যে যে দীর্ঘ রচনাটি পাঠালেন তার নাম “সূক্ষ্মলোম পরিণয়”। সেটি হচ্ছে কৌতুকনাটিকা এবং অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত। জন্তুরা হচ্ছে তার পাত্র-পাত্রী, নায়ক ও নায়িকা হচ্ছে ভল্লুক ও ভল্লুকী। জন্তুদের নিয়ে তার আগে বাংলা ভাষায় আর কোন নাটক বা উপন্যাস রচিত হয় নি। রচনাটি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়ে পড়ুয়াদের চমৎকৃত করেছিল। সকলের মুখেই শুনেছি তার সুখ্যাতি। কিন্তু বড়ই দুঃখের বিষয় যে, এমন মনোজ্ঞ রচনাও আজ পর্যন্ত “মর্মবাণী”র পৃষ্ঠার মধ্যেই নিদ্রিত হয়ে আছে, গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় নি।

 সেই সময়েই প্রভাতকুমারের সঙ্গে একাধিকবার পত্রালাপ হয়েছিল বটে, কিন্তু তাঁর সঙ্গে আবার আমার চোখোচোখি দেখা হয় অনেক বৎসর পরে, প্রভাতকুমার যখন কলকাতায় এলেন তখন। তাও মাঝে মাঝে। তিনি অভিনয়ের অনুরাগী ছিলেন, মিনার্ভা থিয়েটারে তাঁর সঙ্গে দেখাশুনো হ’ত— কিন্তু ঐ পর্যন্ত। যদিও তখন আমি আর বয়সে কাঁচা বা নাবালক নই, দস্তুরমত পুত্রকন্যার পিতা, তবু তাঁর পরম গম্ভীর মুখ দেখে দূর থেকেই প্রণাম ক’রে আমি স’রে পড়তুম, সাহস সঞ্চয় ক’রে আলাপ জমাতে পারতুম না।

 আমি তখন ‘নাচঘরে’র সম্পাদক। “ইণ্ডিয়ান সিনেমা আর্টস” নামক চলচ্চিত্র সম্প্রদায় প্রভাতকুমারের “নিষিদ্ধ ফল” নামে গল্প অবলম্বন ক’রে একখানি নির্বাক ছবি তুললে এবং তাদের বাঘমারির ষ্টুডিওয় ছবিখানি সর্বপ্রথমে দেখবার জন্যে আমন্ত্রিত হলুম। সেইখানেই আবার প্রভাতকুমারের সঙ্গে দেখা এবং তাঁর সঙ্গে ভালো ক’রে কথা কইবার সুযোগ পেলুম। চিত্র-প্রদর্শনী শেষ হ’ল। শ্রীকালীপ্রসাদ ঘোষের পরিচালনায় তোলা সেই ছবিখানি

৭৬