পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

সে কথা বলা বাহুল্য। বললুম, ‘আগে আপনি কবিতা লিখতেন। আর লেখেন না, কেন?’

 —‘কবিতা আর আসে না।’

 সেদিন কিন্তু ভালো ক’রে আলাপ জমল না। আমি আরো দু-একটা প্রশ্ন করলুম, তিনি খুব সংক্ষেপে উত্তর দিলেন। তাঁর গাম্ভীর্য দেখে আমি আর বেশী কথা কইতে ভরসা করলুম না।

 কয়েক মাস পরে “সংস্কল্প” উঠে গেল। খুব ঘটা ক’রে “ভারতবর্ষে”র সঙ্গে প্রতিযোগিতা করবার জন্যে “সঙ্কল্পে”র জন্ম হয়েছিল। গুণে সে “ভারতবর্ষে”র চেয়ে খাটো ছিল না, কিন্তু অর্থবল না থাকলে প্রতিযোগিতা সফল হয় না। তারপরেই নাটোরের মহারাজা জগদিন্দ্রনাথ রায় ও অমূল্যচরণ বিদ্যাভূষণের সম্পাদনায় “মর্মবাণী” নামে একখানি সাহিত্য সম্পর্কীয় সপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়, আমি ছিলুম তার সহকারী সম্পাদক। আসলে সম্পাদকীয় সমস্ত কর্তব্য পালন করতে হ’ত আমাকেই। কারণ কাগজখানি প্রকাশিত হবার অল্পদিন পরেই মহারাজা দীর্ঘকালের জন্যে বিদেশে চ’লে গিয়েছিলেন এবং অমূল্যবাবু নানা কার্যে ব্যস্ত হয়ে থাকতেন, সম্পাদকীয় কাজে মনোনিবেশ করবার অবসর বড় একটা পেতেন না। পত্রিকাখানির আরম্ভ হয়েছিল আশাপ্রদ। কিন্তু হঠাৎ বাধে পৃথিবীর প্রথম মহাযুদ্ধ, কাগজের ও অন্যান্য জিনিষের দাম বেড়ে ওঠে, লাভের চেয়ে লোকসানই হ’তে থাকে বেশী। প্রায় বৎসর খানেক নিজের পৃথক অস্তিত্ব বজায় রেখে “মর্মবাণী” পরে “মানসী”র সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে যায়। এই “মর্মবাণী”র সময়েই আমার প্রথম গল্পগ্রন্থ “পসরা” প্রকাশিত হয়।

 প্রভাতকুমার সে সময়ে গয়ায় থাকতেন। আমি তাঁর কাছে তাঁর কবিতা রচনার কথা তুলেছিলাম ব’লে কিংবা নাটোরের

৭৫