পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

 সে আর কত বৎসরের কথা হবে? সাঁইত্রিশ কি আটত্রিশ বোধ হয়। কিন্তু সাহিত্যিকদের যে প্রকাণ্ড দলটি সেদিনকার সেই প্রীতিভোজের আসরটিকে আনন্দ-কোলাহলে মুখরিত ক’রে তুলেছিল, তার মধ্যে তিন-চারজনের বেশী লোক এখন আর বর্তমান নেই ইহধামে। ব্যাধি-বার্ধক্যের ধাক্কা সামলে যে তিন-চারজন আজও কায়ক্লেশে টিকে আছেন, তাঁরাও বোধ করি মনে মনে সর্বদাই বলছেন—

“ওরে আয়!
আমায় নিয়ে যাবি কে রে
বেলা-শেষের শেষ খেয়ায়!”

মানুষের জীবন কি ভঙ্গুর! আজ উৎসব, কাল শ্মশান। এই ক্ষণিকের অস্তিত্বকেও আমরা হাসিখুসি দিয়ে ভূষিত করতে পারি না, এর জন্যে দরকার হয় কত হানাহানি আর রেষারেষি। মানুষ কি যুক্তিহীন!

 প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গে বলেছি, প্রথম মহাযুদ্ধ আরম্ভ হবার ঠিক আগেই জগদিন্দ্রনাথ ও অমূল্যচরণ বিদ্যাভূষণের সম্পাদনায় “মর্মবাণী” নামে সাহিত্য-সম্পর্কীয় একখানি সাপ্তাহিক পত্রিকা বেরিয়েছিল এবং আমি ছিলুম তার সহকারী সম্পাদক। এই সূত্রেই জগদিন্দ্রনাথের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়ে ওঠে অধিকতর ঘনিষ্ঠ।

 মহারাজা আমাকে পত্রিকার প্রথম সংখ্যার জন্যে একটি ছোট গল্প রচনা করতে বললেন। আমি রচনা করলুম, “সোনার চুড়ি”। অমূল্যবাবু বললেন, ‘মহারাজাকে শুনিয়ে আসুন।’ চৌরঙ্গীর উপরে ছিল “মানসী” কার্যালয়। সেখানে প্রত্যহ সন্ধ্যায় বসত জগদিন্দ্রনাথের বৈঠক। গিয়ে দেখি ঘরের ভিতরে ব’সে আছেন

৯১