পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ডানপিটে \) 0 \) সতীশ চিরকাল খাইতে ও খাওয়াইতে ভালবাসে। আজকাল অভাবে পড়িয়া গিয়াছে, অমন উপাৰ্জনক্ষম ছেলে থাকিতেও নাই-তাই গ্রামের মেয়েরা ভাল জিনিসটা বাড়ীতে হইলে সতীশকে মাঝে মাঝে পাঠাইয়া দেয় । আন্নাকালী চোদ-পনেরো বছরের সুন্দরী মেয়ে-উপরি উপরি চারটীি কন্যার জন্মগ্রহণের পরে বাপ-মা পঞ্চম ও সর্বকনিষ্ঠ কন্যাটীর ওই নাম রাখিয়াছিল, নামের সঙ্গে তার চেহারার কোনো সম্পর্ক নাই। সে হাসিযা বলিল-আপনার হাতের সেই কলায়ের ডাল রান্না কখনো ভুলবো না জ্যাঠাবাবু। মেয়ে মানুষে অমন রাধতে পারে না । সতীশ, খুন্সী হইয়া উজ্জল মুখে বলিল-কবে খেলি রে, আন্না ? আন্নাকালী ঘাড় দুলাইয়া বলিল-বা রে, এই তো ভাদ্রমাসে আরান্ধর দিন ? তারপর ঘরের দিকে চাহিয়া বলিল-জ্যাঠাইমা কেমন ? —ওই এক রকম, ওর আবার ভালো আর মন্দ । ওরই জন্যে তো কোথায় যেতে পারি। নে আন্না । নইলে কাশীতে গেলে একটা পেট চলে যায়। আর কাশীময় আমার বন্ধু-বান্ধব-তা। ওর অযত্ন হবে, ওকে দেখবে শুনবে কে, সেই জন্যেই তো আছি আটুকে । নইলে আমার আবার ভাবনা ? এই তনবি, কাশীতে আমরা কি করতাম ? তারপর কাশীর গল্প আরম্ভ হয়। আন্নাও এসব গল্প ইতিপূর্বে শুনিয়াছে, কিন্তু গল্প শুনিতে সে ভালবাসে, বিশেষ করিয়া জ্যাঠামহাশয়ের মুখে। সে রোয়াকের পৈঠার উপর বসিয়া পড়ে। কাশীর কথা হইতে হইতে কখন নেপালের কথা আসিয়া পড়িয়াছে দু’জনের কেহই লক্ষ্য করে নাই, হঠাৎ আন্না উঠানের দিকে ভীত চোখে চাহিয়া বলিল-জ্যাঠাইমা কোথায় বেরিয়ে যাচ্ছে যে ! • • • -ধৰ্ব, ধৰ্ব, মা, ধৰ্ব্ব-নিয়ে আয়। না, জালালে বাপু । আয় দৌড়িয়া উঠিয়া গিয়া শীর্ণদেহ, রুক্ষকেশ, ৰকুনি-রাত জ্যাঠাইমার হাত