পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 যাত্রাবদল ওদিকে কিছুদিন থাকবার পর দেখলাম জায়গাটাির মাটীতে ভারী চমৎকার ফুল জন্মায়, জমিও সস্তা। সেখানে এখন আছি-ফুলের বাগান করেচি-তুমি তো জানো বাগানের সখ আমার চিরকাল। কিছু চাষ বাসের জমি নিয়েচি তাতেই চলে যায়। কিন্তু সে সব কথা থাক-আজ এখন একটা গল্প করি শোনো । গল্পের মত শোনাবে, কিন্তু আসলে সত্যি ঘটনা। আর আশ্চৰ্য্য এই, দশবছর আগে যখন তোমাদের মেসে থাকতাম তখন এ গল্পের সুরু, এবং এর সমাপ্তি ঘটেচে গতকাল । আমি বোল্লাম-ব্যাপার কি, তোমার কথা শুনে মনে হচ্চে নিশ্চয়ই প্রেমের কাহিনী জড়ানো আছে। এর সঙ্গে । বলে বলে-সে বোল্লে-না, সে সব নয়। অন্য এক ব্যাপার, কিন্তু আমার পক্ষে কোনও প্রণয়কাহিনীর চেয়ে তা কম মধুর নয়। শোনো বলি। আচ্ছা তোমার মনে আছে-মেসে থাকতে আমি একটা এরিকা পাম কিনেছিলাম, আমাদের ঘরের সামনে টবে বসানো ছিল মনে আছে ? আচ্ছা তা হোলে শোনো । তারপর আধঘণ্টা বসে হিমাংশু তার গল্পটা বলে গেল। আমরা আরও দুবার চা খেলাম, একবাক্স সিগারেটু পোড়ালাম। বৌবাজারের মোড়ে গির্জার ঘড়িটায় সাড়ে নটা যখন বাজল, তখন হিমাংশু গল্প শেষ কবে বিদায় নিয়ে চলে গেল। তার গল্পটা আমি আমার নিজের কথায় বোলবো, কেননা হিমাংশু সম্বন্ধে কিছু জানা থাকা দরকার,-গল্পটা ঠিক বুঝতে হোলে, সেটা আমাকে গোড়াতেই বলে দিতে হবে । হিমাংশু যখন আমার সঙ্গে থাকতো, তখন তার চালচলন দেখলে মনে হবার কথা যে, সে বেশ অবস্থাপন্ন ঘরের ছেলে। সে যে আহার বিহারে বা বেশ ভূষায় খুব বেশী সৌখীন ছিল তা নয়, তার সখ ছিল নানা ধরণের এবং এই সখের পেছনে সে পয়সা ব্যয় করতে নিতান্তই বে-আন্দাজী । তায় প্রধান সখি ছিল গাছপালা ও ফুলের। আমার ফুলের সখটা হিমাংশুর