পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিনে দেখা 86 কাছ থেকেই পাওয়া একথা বলতে আমার কোনো লজ্জা নেই। কারণ যত তুচ্ছ, যত অকিঞ্চিৎকর জিনিস হয়েই হোক না কেন, যেখানে সত্যি কোনো আগ্রহ বা ভালবাসার সন্ধান পাওয়া যায়-তাকে শ্ৰদ্ধা না করে পারা R হিমাংশুর গাছপালার ওপর ভালবাসা ছিল সত্যিকার জিনিস। সে ভালো খেতে না, ভাল কাপড় জমা কখনো দেখিনি তাব গায়ে-কিন্তু এ ধরণের সুখ সাচ্ছন্দ্য তার কাম্যও ছিল না। তার পয়সার সচ্ছলতা ছিল না কখনো, টুইশানি কবে দিন চালাতো, তাও আবার সব সময় জুটুতো না, তখন বন্ধুবান্ধবদের কাছে ধার করতো। যখন ধারও মিলতো না তখন দিনকতক চন্দননগরে এক মাসীর বাড়ি গিয়ে মাস খানেক, মাস দুই কাটিয়ে আসতো। কিন্তু পয়সা হাতে হোলে কাপড় জামা না। কিনুক, খাওয়া দাওয়ায় ব্যয় করুক না করুক, ভালো গাছপালা দেখলে কিনবেই। মেসে আমাদের ঘরের সামনে ছোট একটা অপরিসর বারান্দাতে সে তার গাছপালার টবগুলো রাখতো । গোলাপের ওপর তার তত বোক ছিল না, সে ভাল বাসতো নানা জাতীয় পাম-বিশেষ করে বড় জাতীয় পাম।--আর ভাল বাসতো দেশী বিদেশী লতা-উইষ্টারিয়া, অতসী, মাধবীলতা, বোগেনভিলিয়া ইত্যাদি । কত পয়সাই যে এদের পেছনে খরচ করেছে। সকালে উঠে। ওর কাজই ছিল গাছের পাট কৰ্ত্তে বসা । শুকনো ডালপালা ভেঙ্গে দিচ্ছে, গাছ ছেটে দিচ্ছে, এ টিবের মাটি ও টবে ঢালচে । পুরোনো টব ফেলে দিয়ে নতুন টবে গাছ বসাচ্চে, মাটী বদলাচ্চে। আবার মাঝে মাঝে মাটীর সঙ্গে নানা রকমের সারা মিশিয়ে পরীক্ষা কৰ্ত্ত । এ সব সম্বন্ধে ইংরিজি বাংলা নানা বই কিনতো—একবার কি একটা উপায়ে ও একই লতায় নীলকলমী ও শাদাকলমী ফোটালে। ভায়োলেটের ছিট ছিটু দেওয়া অতসী অনেক কষ্টে তৈরী