আর্যসমাজের ভিত্তিমূল। ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় বৈশ্য এই তিন বর্ণ ই পূর্বে দ্বিজ বলিয়া পরিচিত হইতেন, বৃত্তিভেদ ভিন্ন তাঁহাদের মধ্যে আর কোথাও কোনো বৈষম্য ছিল না। কালক্রমে দ্বিজত্বের সাধনা যেমন বিলুপ্ত হইয়াছে এবং দ্বিজত্ব কেবলমাত্র ব্রাহ্মণের মধ্যেই আবদ্ধ হইয়া পড়িয়াছে, স্ব স্ব বৃত্তির অনুশীলনও তেমনি ভিন্ন ভিন্ন বর্ণের দ্বারা আচরিত হইতেছে না। ব্রাহ্মণ যিনি নির্লিপ্ত থাকিয়া তপস্যা করিবেন, সমাজের ত্যাগের নিত্য আদর্শটিকে বিশুদ্ধভাবে নিজ-জীবনে রক্ষা করিবেন, তিনি সে বৃত্তি রক্ষা না করিয়া দশের ভিড়ে মিশিয়া শুদ্রবৃত্তি গ্রহণ করিয়াছেন। বৃত্তিভেদমূলক সমাজব্যবস্থাকে সেইজন্য পুনরায় তাহার পূর্বতন বিশুদ্ধতায় দৃঢ় করিতে হইবে, নহিলে আমাদের সমাজের কল্যাণ নাই— রবীন্দ্রনাথ এই কথাটিই ঘোষণা করিতেন।
এখানে একটি কথা বলিয়া রাখি। আধুনিক নব্য হিন্দুদলের গোঁড়া হিঁদুয়ানির পৃষ্ঠপোষক রবীন্দ্রনাথ কোনো অবস্থাতেই ছিলেন না। যাহা আছে তাহাই বেশ আছে এবং থাকিবে, এ কথা তিনি কোথাও বলেন নাই। ‘ব্রাহ্মণ’ নামক প্রবন্ধে তিনি স্পষ্টই বলিয়াছিলেন যে, কায়স্থ সুবর্ণবণিক প্রভৃতি জাতিরা যদি দ্বিজপদবাচ্য না হন তবে ব্রাহ্মণ দাঁড়াইবার বল পাইবেন না। তাঁহার ভাব ছিল এই যে, সমাজকে দেশবোধে পূর্ণ হইয়া উঠিয়া একটা শক্তি হইয়া উঠিতে হইবে, যাহার মধ্যে প্রত্যেক ব্যক্তি আপনার একটা গৌরব অনুভব করিতে পারিবে।
কিন্তু সেইজন্য এ কথা বলিতে হইবে যে, এমন করিয়া দেখা কেবলমাত্র আপনার ভাবের দ্বারাই দেখা। ভাব যতই প্রবল হয়, বাস্তবকে সে ততই অবজ্ঞার দ্বারা দূরে খেদাইয়া রাখে। ভাবুকের ভাব যে তাহারই একটি বিশেষ শক্তি, অন্যের যে তাহা নাই এবং অন্য
১০৫