বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রবীন্দ্রনাথ - অজিতকুমার চক্রবর্তী (১৯৬০).pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

হৃদয়কে দোলা দিতেছে অথচ ভোগপ্রবৃত্তি তাহাতে মিশিয়া একটি মোহরচনা করিতেছে— তখনও এই বেদনা শেষাশেষি জাগিতেছে যে, বাসনা সমস্ত ম্লান করিয়া দিল, তাহার জন্য বৃহতের সঙ্গে যোগের বিচ্ছেদ ঘটিতেছে। সেই বেদনাতেই কবি বলিতেছেন:

ছুঁয়ো না, ছুঁয়ো না ওরে, দাঁড়াও সরিয়া।
ম্লান করিয়ো না আর মলিন পরশে।
ওই দেখো তিলে তিলে যেতেছে মরিয়া
বাসনা- নিশ্বাস তব গরল বরষে। ...
যে প্রদীপ আলো দেবে তাহে ফেল শ্বাস,
যারে ভালোবাস তারে করিছ বিনাশ!

 তার পর ‘মানসী’তে আপনার ব্যক্তিগত আবরণের মধ্যে যখন প্রেমকে নিবিড় করিয়া তাহাকে তাহারই মধ্যে একান্ত করিয়া দেখিতেছেন, তখনও ভিতরে ভিতরে ঐ এক ক্রন্দন জাগিতেছে যে, প্রেম সব নয়, সমস্ত পরিপূর্ণতার মধ্যে তাহার যেটুকু স্থান সে তাহা ছাড়াইয়া অত্যন্ত একান্ত হইয়া উঠিতে চায়।

বৃথা এ ক্রন্দন!
বৃথা এ অনল-ভরা দুরন্ত বাসনা!...
ক্ষুধা মিটাবার খাদ্য নহে যে মানব,
কেহ নহে তোমার আমার।
অতি সযতনে
অতি সংগোপনে,
সুখে দুঃখে, নিশীথে দিবসে,
বিপদে সম্পদে,
জীবনে মরণে,...

২০