জীবন নবীন পথিকের মতো রাজপথে দেখা দিতেছে, ইচ্ছা থাকিলেও সেই প্রাসাদের শতসহস্র বেষ্টন ভেদ করিয়া তাহার কাছে আত্মপরিচয় দেওয়া ঘটিয়া উঠিতেছে না, লগ্ন বারবার ভ্রষ্ট হইয়া যাইতেছে— শেষকালে হতাশ প্রাণ কাঁদিয়া বলিতেছে:
রয়েছি বিজন রাজপথ-পানে চাহি,
বাতায়নতলে বসেছি ধূলায় নামি,
ত্রিযামা যামিনী একা বসে গান গাহি,
‘হতাশ পথিক, সে যে আমি, সেই আমি।’
পূর্বজীবনকে বিদায় দিবার এই দীর্ঘনিশ্বাস সকল কবিতার মধ্যেই আছে।
“বিদায়” কবিতাটিতে যখন ‘সময় হয়েছে নিকট এখন বাঁধন ছিঁড়িতে হবে,’ তখন মনে জাগিতেছে:
অরুণ তোমার তরুণ অধর,
করুণ তোমার আঁখি
অমিয়রচন সোহাগবচন
অনেক রয়েছে বাকি।
“অশেষ” কবিতাটিতেও ঐ ক্রন্দন। সমস্ত কাজকর্ম চুকাইয়া যখন জীবনের বিশ্রামের সময় উপস্থিত, তখন কেন— ‘আবার আহ্বান’? কতদিন বসিয়া বসিয়া কত বিচিত্র আয়োজনে জীবনটিকে এক রকম করিয়া পূর্ণ করা হইয়া গিয়াছে— তাহার স্বাভাবিক পরিণাম ছিল একটি স্তব্ধবিরল বিশ্রামের মধ্যে— কেন সেই বিশ্রাম হইতে তাহাকে বঞ্চিত করিয়া নূতন পথে আবার ঠেলিয়া দেওয়া?
রহিল রহিল তবে— আমার আপন সবে,
আমার নিরালা,
৭৭