পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) প্রথম খণ্ড.pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী বালিকার মুখে চোকে শীতল সলিল-সেকে স্বধীরে বালিকা পুনঃ মেলিল নয়ন । মুদিত নলিনীকলি মরমহতাশে জলি মূরছি সলিলকোলে পড়িলে যেমন— সদয়া নিশির মন হিম সেঁচি সারাক্ষণ প্রভাতে ফিরায়ে তারে দেয় গো চেতন । মেলিয়া নয়নপুটে বালিকা চমকি উঠে একদৃষ্টে পথিকেরে করে নিরীক্ষণ । পিতা মাতা ছাড়া কারে মানুষে দেখে নি হা রে, বিস্ময়ে পথিকে তাই করিছে লোকন ! আঁচল গিয়াছে থ'সে, অবাক রয়েছে ব’সে বিস্ফারি পথিক-পানে যুগল নয়ন । দেখেছে কত্ব কেহ কি এহেন মধুর আঁখি ? স্বগের কোমল জ্যোতি খেলিছে নয়নে— মধুর-স্বপনে-মাখা সারল্য-প্রতিমা-আঁকা ‘কে তুমি গো " জিজ্ঞাসিছে যেন প্রতিক্ষণে । পৃথিবী-ছাড়া এ আঁখি স্বর্গের আড়ালে থাকি পৃথ্বীরে জিজ্ঞাসে 'কে তুমি ? কে তুমি’ ? মধুর মোহের ভূল, এ মুখের নাই তুল— স্বর্গের বাতাস বহে এ মুখটি চুমি ! পথিকের হৃদে আসি নাচিছে শোণিত রাশি, অবাকৃ হইয়া বসি রয়েছে সেথায় ! চমকি ক্ষণেক-পরে কহিল সুধীর স্বরে বিমোহিত পাম্ববর কমলাবালায়, *সুন্দরি, অামি গে৷ পান্থ দিকৃত্ৰান্ত পথশ্ৰাম্ভ উপস্থিত হইয়াছি বিজন কাননে । কাল হতে ঘুরি ঘুরি শেষে এ কুটারপুরী আজিকার নিশিশেষে পড়িল নয়নে ! বালিকা ! কি কব জায়, আশ্রয় তোমার দ্বার পাৰ পথহারা আমি করি গে প্রার্থনা।