চারিত্রপূজা & eo তাহাদের বেদন আমাদের জীবনকে স্পর্শ করে না। কারণ, আমরা গতানুগতিক, যেখানে দশ জনের বেদনাবোধ নাই সেখানে আমরা অচেতন । আমরা প্রকৃতরূপে, প্রত্যক্ষরূপে, অব্যবহিতরূপে, তাহদের বঞ্চিত জীবনের সমস্ত দুঃখ-অবমাননাকে আপনার দুঃখ ও অবমাননা -রূপে অনুভব করিতে পারি না। কিন্তু ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে আপন অতিচেতনার দও বহন করিতে হইয়াছিল। অভ্যাস লোকাচার ও অসাড়তার পাষাণব্যবধান আশ্রয় করিয়া পরের দুঃখ হইতে তিনি আপনাকে রক্ষা করিতে পারেন নাই। এইজন্ত আমরা যেমন ব্যাকুলভাবে আপনার দুঃখ মোচন করিতে চেষ্টা করিয়া থাকি, তিনি যেন তাহ অপেক্ষ অধিক প্রাণপণে দ্বিগুণতর প্রতিজ্ঞাসহকারে বিধবাগণকে অতলম্পর্শ অচেতন নিষ্ঠুরতা হইতে উদ্ধার করিতে চেষ্টা করিয়াছিলেন। আমাদের পক্ষে স্বার্থ যেমন প্রবল, পরমার্থ তাহার পক্ষে ততোধিক প্রবল ছিল । এমন একটি দৃষ্টান্ত দিলাম। কিন্তু তাহার জীবনের সকল কার্ধেই দেখা গিয়াছে, তিনি যে চেতনারাজ্যে, যে মননলোকে বাস করিতেন, আমরা তাহা হইতে বহু দূরে অবস্থিত ; তাহার চিস্তা ও চেষ্টা, বুদ্ধি ও বেদনা গতানুগতিকের মতো ছিল না, তাহ পারমার্থিক ছিল। i. তাহার মতো লোক পারমার্থিকতাভষ্ট বঙ্গদেশে জন্সিয়াছিলেন বলিয়া, চতুর্দিকের নিঃসাড়তার পাষাণখণ্ডে বারম্বার আহত-প্রতিহত হইয়াছিলেন বলিয়া, বিদ্যাসাগর তাহার কর্মসংকুল জীবন যেন চিরদিন ব্যথিতযুদ্ধভাবে যাপন করিয়াছেন। তিনি যেন সৈন্তহীন বিদ্রোহীর মতো তাহার চতুর্দিককে অবজ্ঞা করিয়া জীবনরণরত্নভূমির প্রাস্ত পর্যন্ত জয়ধ্বজ নিজের স্বন্ধে একাকী বহন করিয়া লইয়া গেছেন। তিনি কাহাকেও ডাকেন নাই, তিনি কাহারও সাড়াও পান নাই, অথচ বাধা ছিল পদে পদে। তাহার মননজীবী অন্তঃকরণ র্তাহাকে প্রবল আবেগে কাজ করাইয়াছিল, কিন্তু গতজীবন বহিঃসংসার তাহাকে আশ্বাস দেয় নাই । তিনি যে শবসাধনায় প্রবৃত্ত ছিলেন তাহার উত্তরসাধকও ছিলেন তিনি নিজে । 鹹 আধুনিক ইংলণ্ডে বিদ্যাসাগরের ঠিক উপমা পাওয়া যায় না। কেবল জনসনের সহিত কতকগুলি বিষয়ে তাহার অত্যন্ত সাদৃশু দেখিতে পাই। সে সাদৃশু বাহিরের কাজে ততটা নয়—কারণ, কাজে বিদ্যাসাগর জনসন অপেক্ষ অনেক বড়ে ছিলেন, কিন্তু এই সাদৃশ্ব অন্তরের সরল প্রবল এবং অকৃত্রিম মন্থগুৰে। জনসনও বিদ্যাসাগরের স্তায় বাহিরে রূঢ় ও অন্তরে স্থকোমল ছিলেন ; জননও পাণ্ডিত্যে অসামান্ত, বাক্যালাপে স্বরসিক, ক্ৰোধে উদ্দীপ্ত, দেহরসে জার্ক্স, মতে নিৰ্ভীক, হৃদয়ভাবে অকপট 8|98 sk
