পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী সেদিন বুঝিব মনে নাই নাই বস্তুর বন্ধন, শূন্যে শূন্তে রূপ ধরে তোমারি এ বীণার স্পন্দন ; নেমে যাবে সব বোঝা, থেমে যাবে সকল ক্ৰন্দন, ছন্দে তালে ভুলিব আপনা, বিশ্বগীত-পদ্মদলে স্তব্ধ হবে অশাস্ত ভাবনা । সঁপি দিব স্থখ দুঃখ আশা ও নৈরাহু যত কিছু তব বীণাতারে,— ধরিবে গানের মূর্তি, একাস্তে করিয়া মাথা নিচু শুনিব তাহারে । দেখিব তাদের যেথা ইন্দ্ৰধনু অকস্মাং ফুটে ; দিগন্তে বনের প্রান্তে উষার উত্তর যেথা লুটে ; বিবাগি ফুলের গন্ধ মধ্যাহ্নে যেথায় যায় ছুটে ; নীড়ে-ধাওয়া পাখির ডানায় সায়াহ-গগন যেথা দিবসেরে বিদায় জানায় । সেদিন আমার রক্তে শুনা যাবে দিবসরাত্রির নৃত্যের নূপুর। নক্ষত্র বাজাবে বক্ষে বংশীধ্বনি আকাশযাত্রীর আলোকবেণুর। সেদিন বিশ্বের তৃণ মোর অঙ্গে হবে রোমাঞ্চিত, আমার হৃদয় হবে কিংশুকের রক্তিমালাস্থিত ; সেদিন আমার মুক্তি, যবে হবে, হে চিরবাঞ্ছিত, তোমার লীলায় মোর লীলা,— যেদিন তোমার সঙ্গে গীতরঙ্গে তালে তালে মিল । আগুেস জাহাজ ২২ অক্টোবর, ১৯২৪