পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চোখের বালি 曝 # 2ఫిలి উঠিতেই বিনোদিনী কহিল, "ঠাকুরপো, তুমি বসে, আমার মাথা খাও উঠিয়ে না । আমি তোমার পায়ের কাছে বসিবারও যোগ্য নই, তুমি দয়া করিয়াই সেখানে স্থান দিয়াছ। দূরে থাকিলেও এই অধিকারটুকু আমি রাখিব।” এই বলিয়। বিনোদিনী কিছুক্ষণ চুপ করিয়া রহিল। তাহার পরে হঠাৎ চমকিয়া উঠিয়া কহিল, “তোমার খাওয়া হইয়াছে, ঠাকুরপো ?” বিহণী কহিল, “স্টেশন হইতে খাইয়া আসিয়াছি।” বিনোদিনী । আমি গ্রাম হইতে তোমাকে যে চিঠিখানি লিখিয়াছিলাম, তাহা খুলিয়া কোনো জবাব না দিয়া মহেন্দ্রের হাত দিয়া আমাকে ফিরাইয়া পাঠাইলে কেন । বিহারী । সে চিঠি তো আমি পাই নাই । বিনোদিনী । এবারে মহেন্দ্রের সঙ্গে কলিকাতায় কি তোমার দেখা হইয়াছিল । বিহারী ! তোমাকে গ্রামে পৌছাইয়া দিবার পরদিন মহেঞ্জের সঙ্গে দেখা হইয়াছিল, তাহার পরেই আমি পশ্চিমে বেড়াইতে বাহির হইয়াছিলাম, তাহার সঙ্গে আর দেখা হয় নাই । বিনোদিনী । তাহার পূর্বে আর-এক দিন আমার চিঠি পড়িয়া উত্তর না দিয়া ফিরাইয়া পাঠাইয়াছিলে ? বিহারী ! না, এমন কখনোই হয় নাই । বিনোদিনী স্তম্ভিত হইয়া বসিয়া রহিল । তাহার পরে দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া কহিল, “সমস্ত বুঝিলাম । এখন আমার সব কথা তোমাকে বলি। যদি বিশ্বাস কর তো ভাগ্য মানিব, যদি না কর তো তোমাকে দোষ দিব না, আমাকে বিশ্বাস করা কঠিন * বিহারীর হৃদয় তখন আর্দ্র হইয়া গেছে । এই ভক্তিভারনম্র বিনোদিনীর পূজাকে সে কোনোমতেই অপমান করিতে পারিল না । সে কহিল, “বোঠান, তোমাকে কোনো কথাই বলিতে হইবে না; কিছু না শুনিয়া আমি তোমাকে বিশ্বাস করিতেছি । আমি তোমায় ঘৃণা করিতে পারি না । তুমি আর একটি কথাও বলিয়ে না।” শুনিয়া বিনোদিনীর চোখ দিয়া জল পড়িতে লাগিল, সে বিহারীর পায়ের ধুলা মাথায় তুলিয়া লইল কহিল, “সব কথা না বলিলে আমি বাচিব না। একটু ধৈর্য ধরিয়া শুনিতে হইবে— তুমি আমাকে যে-আদেশ করিয়াছিলে, তাহাই আমি শিরোধাৰ করিয়া লইলাম। যদিও তুমি আমাকে পত্রটুকুও লেখ নাই, তবু আমি আমার সেই গ্রামে লোকের উপহাস ও নিন্দা সহ করিয়া জীবন কাটাইয়া দিতাম, তোমার স্নেহের পরিবর্তে তোমার শাসনই আমি গ্রহণ করিতাম— কিন্তু বিধাতা তাহাতেও বিমুখ হইলেন । আমি ষে-পাপ জাগাইয়া তুলিয়াছি, তাহা আমাকে \రి-N9\శి