পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छॉब्ल অধ্যায় •LOL এলা ক্ষত উঠে পড়ে বললে, “চলে অস্তু, ঘরে চলে ।” অতীন উঠে দাড়াল, বললে “ভয় ! এতদিন পরে শুরু হল ভয় ! জিত হল আমার। যৌবন যখন প্রথম এসেছিল তখনও মেয়েদের চিনি নি। কল্পনায় তাদের .দুর্গম দূরে রেখে দেখেছি ; প্রমাণ করবার সময় বয়ে গেল যে, তোমরা বা চাও তাই আমি । অস্তরে আমি পুরুষ, আমি বর্বর উদাম । সময় যদি না হারাতুম এখনই তোমাকে বজ্ৰবন্ধনে চেপে ধরতুম, তোমার পাজরের হাড় টনটন করে উঠত ; তোমাকে ভাববার সময় দিতুম না, কাদবার মতো নিশ্বাস তোমার বাকি থাকত না, নিষ্ঠুরের মতো টেনে নিয়ে যেতুম আপন কক্ষপথে। আজ থে-পথে এসে পড়েছি এ-পৰ ক্ষুরধারার মতো সংকীর্ণ, এখানে দুজনে পাশাপাশি চলবার জায়গা নেই।” “দসু্য আমার, কেড়ে নিতে হবে না গো, নাও, এই নাও, এই নাও।” এই বলে ছ-হাত বাড়িয়ে গেল অতীনের কাছে, চোখ বুজে তার বুকের উপর পড়ে তার মুখের দিকে মুখ তুলে ধরলে । 略 জানালা থেকে এলা রাস্তার দিকে তাকিয়ে হঠাৎ বলে উঠল, “সর্বনাশ ! ওই দেখতে পাচ্ছ ?” “কী বলে দেখি ?” “ওই যে রাস্তার মোড়ে । নিশ্চয় বটু—এখানেই আসছে।” “আসবার যোগ্য জায়গা সে চেনে ।” “ওকে দেখলে আমার সমস্ত শরীর সংকুচিত হয়ে ওঠে। ওর স্বভাবে অনেকখানি মাংস, অনেকখানি ক্লেদ । যত চেষ্টা করি পাশ কাটিয়ে চলতে, ওকে দূরে ঠেকিয়ে রাখতে, ততই ও কাছে এসে পড়ে । অশুচি, অশুচি ওই মানুষটা ।” “আমিও ওকে সহ করতে পারি নে এল৷ ” *ওর সম্বন্ধে অন্তায় কল্পনা করছি বলে নিজেকে শাস্ত করবার অনেক চেষ্টা করি— কোনোমতেই পারি নে। ওর ভ্যাবা ভাবা চোখ দুটাে দুরের থেকে লালায়িত স্পর্শে যেন আমার অপমান করে।”

  • ওর প্রতি ভ্ৰক্ষেপ ক'রো না এলা। মনে মনে ওর অস্তিত্বকে একেবারে উপেক্ষা

করতে পার না ?” 離

  • ওকে ভয় করি বলেই মন থেকে সরাতে পারি নে। ওর একটা ভিতরকার চেহারা দেখতে পাই কুৎসিত অক্টোপস জন্তুর মতো । মনে হয় ও আপনার অন্তর থেকে আটটা চটচটে পা বের করে আমাকে একদিন অসম্মানে ঘিরে ফেলবে—কেবলই তারই চক্রান্ত করছে। একে তুমি আমার অবুঝ মেয়েলি আশঙ্কা বলে হেসে উড়িয়ে দিতে