পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শান্তিনিকেতন দেখিয়েছে। অদ্ভূত সাহসের সঙ্গে অসংকোচে বলেছে ভগবান জীবের কাছে নিজেকে বাধা রেখেছেন-সেই পরম গৌরবের উপরেই জীবের অস্তিত্ব। আমাদের পরম অভিমান এই যে তিনি আমাদের ছেড়ে থাকতে পারেন নি – এই বন্ধনটি তিনি মেনেছেন—নইলে আমরা আছি কী করে । মা যেমন সস্তানের, প্রণয়ী যেমন প্রণয়ীর সেবা করে তিনি তেমনি বিশ্ব জুড়ে আমাদের সেবা করছেন। তিনি নিজে সেবক হয়ে সেবা জিনিসকে অসীম মাহাত্ম্য দিয়েছেন। তার প্রকাগু জগৎট নিয়ে তিনি তো খুব ধুমধাম করতে পারতেন কিন্তু আমাদের মন ভোলাবার এত চেষ্টা কেন ? নানা ছলে নানা কলায় বিশ্বের সঙ্গে আমাদের এত অসংখ্য ভালো লাগাবার সম্পর্ক পাতিয়ে দিচ্ছেন কেন ? এই ভালো লাগাবার অপ্রয়োজনীয় আয়োজনের কি অস্ত আছে ? তিনি নানা দিক থেকে কেবলই বলছেন তোমাকে আমার আনন্দ দিচ্ছি তোমার আনন্দ আমাকে দাও। তিনি । যে নিজেকে চারিদিকেই সীমার অপরূপ ছন্দে বেঁধেছেন—নইলে প্রেমের গীতিকাব্য প্রকাশ হয় না ষে । এই প্রেমস্বরূপের সঙ্গে আমাদের প্রেম যেখানেই ভালো করে না মিলছে সেইখানে সমস্ত জগতে তার বেসুরটা বাজছে । সেইখানে কত দুঃখ যে জাগছে তার সীমা নেই- চোখের জল বয়ে যাচ্ছে । ওগো প্রেমিক, তুমি ষে প্রেম কেড়ে নেবে না তুমি যে মন ভুলিয়ে নেবে—একদিন সমস্ত মনে প্রাণে কাদিয়ে তার পরে তোমার প্রেমের ঋণ শোধ করাবে। তাই এত বিলম্ব হয়ে যাচ্ছে—তাই তো, সন্ধ্যা হয়ে আসে তবু আমার অভিসারের সজ্জা হল না। ২৯ অগ্রহায়ণ ১৩১৫ কী চাই ? জামরা এতদিন প্রত্যহ আমাদের উপাসনা থেকে কী ফল চেয়েছিলুম। আমরা চেয়েছিলুম শান্তি। ভেবেছিলুম এই উপাসনা বনস্পতির মতো আমাদের ছায়া দেবে, প্রতিদিন সংসারের তাপ থেকে আমাদের বাচাবে। কিন্তু শান্ডিকে চাইলে শান্তি পাওয়া যায় না । তার চেয়ে আরও অনেক বেশি না চাইলে শান্তির প্রার্থনাও বিফল হয় । * r জয়ের রোগী কাতর হয়ে বলে আমার এই আলাটা জুড়োক ; হয়তো জলে কাপ