পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VO রবীন্দ্র-রচনাবলী यंबंध :-) ফুলওয়ালির দল ফুল বিক্রি করতে এসেছে। চণ্ডালিকাও আনলে তার ফুলের ডালি। সবাই ঘূণায় তার পাশ কাটিয়ে গেল। দইওয়াল এল দই, বেচাতে, চণ্ডালিকা প্রকৃতি কেনবার জন্যে হাত বাড়াতেই দইওয়ালাকে সবাই নিষেধ করলে। চুড়িওয়াল এল চুড়ি বিক্রি করতে, প্রকৃতি চুড়ি কিনতে চাইতেই চুড়িওয়ালাকে সবাই সতর্ক করে দিলে। চণ্ডালিকা মনের দুঃখে তার সৃষ্টিকর্তকে ধিক্কার দিলে। প্রকৃতির মা মায়ার প্রবেশ ।। ঘরের কাজে চণ্ডালিকার ঔদাসীন্য নিয়ে তাকে ভৎসনা করতেই, মা তাকে অপমানের মধ্যে জন্ম দিয়েছে বলে তাকে তিরস্কার করলে । মা বিঘ্নিত হয়ে চলে গেল। বুদ্ধদেবের শিষ্য আনন্দ এসে জল চাইলেন। তার হাতের জল অশুচি বলে চণ্ডালিকা সংকোচ প্রকাশ করলে। আনন্দ বললেন, “যে জল তৃবিতের তৃষ্ণা দূর করে, তাপিতের তাপ শান্ত করে, সেই জলই শুচি ।” তিনি জল খেয়ে চলে গেলেন । তার করুণা ও তার রূপে প্রকৃতির মন মুগ্ধ হয়ে গেল। পাড়ার মেয়েরা ধানকাটার কাজে ওকে VRe v i s KP, V (VKR VENA GUERRআমার কাজভোলা মন আছে দূরে কোন করে স্বপনের সাধনা ৷” ऍिी पृष्णा বুদ্ধের পূজার অর্ঘ্য নিয়ে পথ দিয়ে চলে গেল পূজারিনীরা। প্রকৃতি এসে গাইলে, “ফুল বলে ধন্য আমি, ধন্য আমি মাটির ‘পরে- “ দেবতা ওগো তোমার পূজা আমার ঘরে। মা এসে বললে, “তুই অবাক কারলি যে, উমার মতো তুই তপস্যা করছিস নাকি । তোর সাধনা কার জন্যে ।” চণ্ডালিকা বললে, “যে আমাকে আহবান করলে, তার জন্যে। আমি ছিলুম বাণীহারা, যে আমাকে বাণী দিয়েছে, আমার মনের মধ্যে যে বাজিয়ে দিয়ে গেছে জল দাও, তার জন্যে” মা বললে, “তোর কাছে কে আবার জল চাইলে, সে কি তোর আপনি লোক নাকি ৷” প্রকৃতি বললে, “তিনি বলেছেন, তিনি আমার আপনি লোকই বটেন । তিনি আমাকে নব জন্ম দিয়েছেন। মন্ত্র পড়ে তুই নিয়ে আয় ভিক্ষুকে এই অমানিতার পাশে, আমি তাকে আত্মনিবেদনের সম্মান দেব।” এত বড়ো স্পর্ধার কথা শুনে মা স্তম্ভিত হয়ে গেল। এমন সময় ভিক্ষুর দল নিয়ে আনন্দ পথ দিয়ে চলে গেলেন। তার দিকে তাকালেন না দেখে চণ্ডালিকার অসহ্য ক্ষোভ হল। মা বললে, “মন্ত্র পড়ে আমি ওঁকে আনিবই ।” তার শিয্যাদের সঙ্গে সন্মোহন নৃত্য করে কন্যার হাতে একটা মায়াদর্পণ দিলে। বললে, “এই দর্পণ নিয়ে যখন তুই নাচবি দেখতে পাবি তার কী प्रयों इश् ।" फुडौम्न मृणा এই দৃশ্যে মন্ত্রের কাজ চলেছে। মায়াদর্পণে আনন্দের, অভিভাব-পৃশ্য দেখে মাঝে মাঝে প্রকৃতি অনুতপ্ত হচ্ছে, মাকে নিষেধ করছে, আবার তাকে উৎসাহিত করছে। অবশেষে মহাকালনাগিনীমন্ত্র-প্রভাবে টান ধরল। পরাভূত আনন্দের অসন্মানে দুঃখার্ত হয়ে আনন্দকে প্রকৃতি প্ৰণাম করে বললে, “আমাকে ক্ষমা করো, তোমাকে মাটিতে টেনেছি, তুমি আমাকে ধূলি হতে তুলে নাও তোমার পুণ্যলোকে ৷” চণ্ডলিকাকে নৃত্যনাট্যে রূপদান করার প্রেরণা প্রসঙ্গে ২১৷৷১৩৮ তারিখে শান্তিনিকেতন হইতে অমিয় চক্রবতীকে লিখিত রবীন্দ্রনাথের একটি পত্রের নিয়ে উদ্যত অংশ প্রণিধানযোগ্য ।