পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পগুচ্ছ 는 8e) খোকা ঘাটের সিড়িতে নামিতে নামিতে আমাকে ডাকিতেছে। চীৎকার করিয়া BBBBSBD DBB BS DB BBB SSSSSS BBB BBB BBBB BBB BB BBS নামিতে লাগিল । ভয়ে আমার হাতে পায়ে যেন থিল ধরিয়া আসিল, পার হইতে আর পারিই না। চোখ বুজিলাম। পাছে কী দেখিতে হয়। এমন সময় পিছল ঘাটে সেই দিঘির জলে খোকার হালি চিরদিনের মতে থামিয়া গেল। পার হইয়া আসিয়া সেই মায়ের কোলের-কাঙাল ছেলেকে জলের তলা হইতে তুলিয়া কোলে লইলাম, কিন্তু আর সে ’মা’ বলিয়া ডাকিল না। আমার গোপালকে আমি এতদিন কাদাইয়াছি, সেই সমস্ত অনাদর আজ আমার উপর ফিরিয়া আসিয়া আমাকে মারিতে লাগিল । বাচিয়া থাকিতে তাহাকে বরাবর ষে ফেলিয়া চলিয়া গেছি, আজ তাই সে দিনরাত আমার মনকে অঁাকড়িয়া ধরিয়া রহিল। আমার স্বামীর বুকে যে কতটা বাজিল লে কেবল তার অন্তর্ধামাই জানেন। আমাকে যদি গালি দিতেন তো ভালো হইত ; কিন্তু তিনি তো কেবল সহিতেই জানেন, কহিতে জানেন না । এমনি করিয়া আমি যখন একরকম পাগল হইয়া আছি, এমন সময় গুরুঠাকুর দেশে ফিরিয়া আসিলেন । যখন ছেলেবয়সে আমার স্বামী তাহার সঙ্গে একত্রে খেলাধুলা করিয়াছেন তখন সে এক ভাব ছিল। এখন আবার দীর্ঘকাল বিচ্ছেদের পর যখন তার ছেলেবয়সের বন্ধু বিদ্যালাভ করিয়া ফিরিয়া আসিলেন তখন তাহার পরে আমার স্বামীর ভক্তি একেবারে পরিপূর্ণ হইয়া উঠিল । কে বলিবে খেলার সাথি, ইহার সামনে তিনি যেন একেবারে কথা কহিতে পারিতেন না । আমার স্বামী অামাকে সাম্বন করিবার জন্য র্তাহার গুরুকে অকুরোধ করিলেন । গুরু আমাকে শাস্ত্র শুনাইতে লাগিলেন । শাস্ত্রের কথায় আমার বিশেষ ফল হইয়াছিল বলিয়া মনে তো হয় না । আমার কাছে সে-সব কথার যা-কিছু মূল্য সে তাহারই মুখের কথা বলিয়া । মানুষের কণ্ঠ দিয়াই ভগবান তাহার অমৃত মাতুষকে পান করাষ্টয়া থাকেন ; আমন স্বধাপাত্র তো তার হাতে আর নাই। আবার, ঐ মানুষের কণ্ঠ দিয়াই তো স্বধা তিনিও পান করেন । গুরুর প্রতি আমার স্বামীর অজস্র ভক্তি আমাদের সংসারকে সর্বত্র মৌচাকের ভিতরকার মধুর মতো ভরিয়া রাখিয়াছিল। আমাদের আহারবিহার ধনজন সমস্তই এই ভক্তিতে ঠাসা ছিল, কোথাও ফাক ছিল না। আমি সেই রসে আমার সমস্ত মন