পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

外欧领庞 २b-१" “মালি, টাকার চেয়ে আরও বড়ে যদি কিছু তোমাকে—” “দিয়েছিল, যতীন, ঢের দিয়েছিস । আমার শূন্য ঘর ভরে ছিলি, এ আমার অনেক জন্মের ভাগ্য। এতদিন তো বুক ভরে পেয়েছি, আজ আমার পাওনা যদি ফুরিয়ে গিয়ে থাকে তো নালিশ করব না। দাও, সব লিখে দাও, লিখে দাও— বাড়িঘর, জিনিসপত্র, ঘোড়াগাড়ি, তালুকমুলুক— যা আছে সব মণির নামে লিখে দাও — এ-সব বোঝা অামার সইবে না ।” “তোমার ভোগে রুচি নেই— কিন্তু মণির বয়স অল্প, তাই—” *ও কথা বলিস নে, ও কথা বলিস নে । ধনসম্পদ দিতে চাস দে, কিন্তু CE히 전事3-”

  • কেন ভোগ করবে না, মালি ।” “ন গো না, পারবে না, পারবে না! আমি বলছি, ওর মুখে রুচবে না ! গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাবে, কিছুতে কোনো রস পাবে না।”

যতীন চুপ করিয়া রহিল। তাতার অভাবে সংসারটা মণির কাছে একেবারে বিস্বাদ হুইয়া যাইবে, এ কথা সত্য কি মিথ্যা, মুখের কি দুঃখের, তাহা সে যেন ভাবিয়া ঠিক করিতে পারিল না। আকাশের তারা যেন তাহার হৃদয়ের মধ্যে আসিয়া কানে কানে বলিল, ‘এমনিই বটে— আমরা তে। হাজার হাজার বছর হইতে দেখিয়া আসিলাম, ংসাব-জোড়া এই-সমস্ত আয়োজন এত-বড়োই ফাকি ৷” যতীন গভীর একটা নিশ্বাস ফেলিয়া বলিল, “দেবার মতো জিনিস তো আমরা কিছুই দিয়ে যেতে পারি নে।” “কম কী দিয়ে যাচ্ছ, বাছা । এই ঘরবাড়ি টাকাকড়ির ছল ক’রে তুমি ওকে যে কী দিয়ে গেলে তার মূল্য ও কি কোনো দিন বুঝবে না। যা তুমি দিয়েছ তাই মাথা পেতে নেবার শক্তি বিধাতা ওকে দিন, এই আশীর্বাদ ওকে করি ।”

  • আর একটু বেদানার রস দাও, আমার গলা শুকিয়ে এসেছে। মণি কি কাল এসেছিল – আমার ঠিক মনে পড়ছে না।”

“এসে ছিল । তখন তুমি ঘুমিয়ে পড়েছিলে । শিয়রের কাছে বলে ব'সে অনেকক্ষণ বাতাস ক’রে তার পরে ধোবাকে তোমার কাপড় দিতে গেল *

  • আশ্চর্য ! বোধ হয় আমি ঠিক সেই সময়েই স্বপ্ন দেখছিলুম, যেন মণি আমার ঘরে আসতে চাচ্ছে— দরজ অল্প-একটু ফাক হয়েছে— ঠেলাঠেলি করছে কিন্তু কিছুতেই সেইটুকুর বেশি আর খুলছে না। কিন্তু, মাসি, তোমরা একটু বাড়াবাডি করছ— ওকে দেখতে দাও যে আমি ময়ছি—নইলে মৃত্যুকে হঠাৎ সইতে পারবে না।”