পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৫৬ ৷ রবীন্দ্র-রচনাবলী 嵩 এই বিরাট বন্ধ থেকে নক্ষত্রে অস্তিরে খবর এন দিচ্ছে কিলে। সহজ উত্তর হচ্ছে আলে। কিন্তু আলো যে চুপচাপ বসে খবর আউড়িয়ে যায় না, আলো যে ডাকের পেয়াদার মতো খবর পিঠে করে নিয়ে দৌড়ে চলে, বিজ্ঞানের এই একটা মস্ত আবিষ্কার। চল বলতে সামান্ত চলা নয়, এমন চলা বিশ্বব্ৰহ্মাণ্ডের আর কোনো দূতেরই নেই। আমরা ছোটাে পৃথিবীর মানুষ, তাই এতকাল জগতের সব চেয়ে বড়ো চলার কথাটা জানবার সুযোগ পাই নি। একদিন বিজ্ঞানীদের অত্যাশ্চর্ষ হিসাবের কলে ধরা পড়ে গেল, আলো চলে সেকেণ্ডে এক লক্ষ ছিয়াশি হাজার মাইল বেগে। এমন একটা বেগ যা অঙ্কে লেখা যায়, মনে আনা যায় না। বুদ্ধিতে যার পরীক্ষা হয়, অনুভবে হয় না। আলোর এই চলনের দৌড় অনুভবে বুঝব, এই পৃথিবীটুকুতে এত বড়ো জায়গা পাব কোথায়। এইটুকুর মধ্যে ওর চলাকে আমরা ন-চলার মতোই দেখে আসছি। পরখ করবার মতে স্থান পাওয়া যায় মহাশূন্যে। স্বৰ্ষ আছে সেই মহাশূন্তের যে দূরত্বমাত্রা নিয়ে, সে যত কোটি মাইল হোক জ্যোতিষ্কলোকের দূরত্বের মাপকাঠিতে খুব বেশি নয়। স্বতরাং এইটুকু দূরত্বের মধ্যে অপেক্ষাকৃত ছোটাে মাপে মাহুষ আলোর দৌড় দেখতে পেল। খবর মিলল যে, এই শূন্ত পেরিয়ে স্বৰ্ষ থেকে পৃথিবীতে আলো আসে প্রায় সাড়ে আট মিনিটে। অর্থাৎ আমাদের দৃষ্টির পাল্লায় স্বর্য যখন উপস্থিত, আসলে তার আগেই সে এসেছে। এই আগমনের খবরটি জানাতে আলো-নকিবের মিনিট আষ্টেক দেরি হল। এইটুকু দেরিতে বিশেষকিছু আসে যায় না। প্রায় তাজ খবরই পাওয়া গেছে। কিন্তু সৌরজগতের সব চেয়ে কাছে আছে যে নক্ষত্র, অর্থাৎ নক্ষত্রমহলে যাকে আমাদের পাড়াপড়শি বললে চলে, যখন সে জানান দিল ‘এই যে আছি তখন তার সেই বার্তা বয়ে আনতে আলোর সময় লাগছে চার বছরের কাছাকাছি। অর্থাৎ এইমাত্র ষে খবর পাওয়া গেল সেটা চার বছরের বাসি। এইখানে দাড়ি টানলেই যথেষ্ট হত, কিন্তু আরও দুরের নক্ষত্র আছে যেখান থেকে আলো আসতে বহু লক্ষ বছর লাগে। I আকাশে আলোর এই চলাচলের খবর বেয়ে বিজ্ঞানে একটা প্রশ্ন উঠল, তার চলার ভঙ্গীট কী রকম। সেও এক আশ্চর্য কথা । উত্তর পাওয়া গেছে তার চলা অতি স্বল্প ঢেউয়ের মতো। কিসের ঢেউ সেকথা ভেবে পাওয়া যায় না ; কেবল আলোর ব্যবহার থেকে এটা মোটামুটি জানা গেছে ওটা ঢেউ বটে। কিন্তু মাহুষের মনকে হয়রান করবার জন্তে সঙ্গে সঙ্গেই একটা জুড়িখবর তার সমস্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ নিয়ে হাজির হল, জানিয়ে দিলে অালো অসংখ্য জ্যোতিক্ষণ নিয়ে ; অতি ছিটেগুলির মতে