বউ-ঠাকুরানীর হাট 8心@ সীতারাম আরো গর্বিত হইয়া উঠিল। কয়দিন ধরিয়া ক্রমিক পরামর্শ চলিতে লাগিল । ی ն: পরামর্শ করিয়া-যাহ স্থির হইল তাছা এই, একটা জাল দরখাস্ত লিখিতে হইবে, যেন যুবরাজ প্রতাপাদিত্যের নামে সম্রাট-বিদ্রোহিতার অভিযোগ করিয়া নিজে রাজ্য পাইবার জন্য দরখাস্ত করিতেছেন। তাহাতে যুবরাজের সীলমোহর মুদ্রিত থাকিবে। রুক্মিণী যে আংটিটি লইয়া আসিয়াছে, তাহাতে যুবরাজের নাম-যুদ্রান্ধিত সীল আছে, অতএব কাজ অনেকটা অগ্রসর হইয়া আছে । পরামর্শমতে কাজ হইল। একখানা জাল দরখাস্ত লেখা হইল, তাহাতে যুবরাজের নাম মুদ্রিত রছিল। নির্বোধ সীতারামের উপর নির্ভর করা যায় না, অতএব স্থির হইল, ভাগবত নিজে দরখাস্ত লইয়া দিল্লীশ্বরের হস্তে সমর্পণ করিবে । ভাগবত সেই দরখাস্তখানি লইয়া দিল্লির দিকে না গিয়া প্রতাপাদিত্যের কাছে গেল। মহারাজকে কহিল, “উদয়াদিত্যের এক ভৃত্য এই দরখাস্তটি লইয়া দিল্লির দিকে যাইতেছিল, আমি কোনো স্বত্রে জানিতে পারি। ভূত্যটা দেশ ছাড়িয়া পলাইয়া গেছে, দরখাস্তটি লইয়া আমি মহারাজের নিকট আসিতেছি।” ভাগবত সীতারামের নাম করে নাই। দরখাস্ত পাঠ করিয়া প্রতাপাদিত্যের কী অবস্থা হইল তাহা আর বলিবার আবশুক করে না। ভাগবতের পুনর্বার রাজবাড়িতে চাকরি হইল । ত্রয়োবিংশ পরিচ্ছেদ বিভার প্রাণের মধ্যে আঁধার করিয়া আসিয়াছে। ভবিষ্যতে কী যেন একটা মৰ্মভেদী দুঃখ, একটা মরুময়ী নিরাশা, জীবনের সমস্ত সুখের জলাঞ্জলি তাহার জন্ত অপেক্ষা করিয়া আছে, প্রতিমুহূর্তে তাহার কাছে কাছে সরিয়া আসিতেছে। সেই যে জীবৃনশূন্তকারী চরাচরগ্রাসী শুল্ক সীমাহীন ভবিষ্যৎ অদৃষ্টের আশঙ্কা,তাহারই একটা ছায়া আসিয়া যেন বিভার প্রাণের মধ্যে পড়িয়াছে। বিভার মনের ভিতরে কেমন করিতেছে। বিভা বিছানায় একেলা পড়িয়া আছে। এ-সময়ে বিভার কাছে কেহ নাই। বিভা নিশ্বাস ফেলিয়া, বিভা কাদিয়া, বিভা আকুল হইয়া কছিল, “আমাকে কি তবে পরিত্যাগ করিলে ? আমি তোমার নিকট কী অপরাধ করিয়াছি ?” কাদিয়া কাদিয়া কহিতে লাগিল, “আমি কী অপরাধ করিয়াছি ?” ছুটি হাতে মুখ ঢাকিয়া বালিশ বুকে লইয়া কাদিয়া কাদিয়া বায় বার করিয়া কছিল, আমি কী
