পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছেলেবেল )به لاوا মলাট-বাধানে বই থাকলে ভালোই চলত। ভাবে ভোর মান্থব, তার ছুটির দিনের সঙ্গে কাজের দিনের তফাত বোঝা যেত না । সন্ধেবেলার সভা যেত ভেঙে । আমি চিরকাল ছিলুম রাত-জাগিয়ে ছেলে । সকলে শুতে বেত, আমি ঘুরে ঘুরে বেড়াতুম, ব্ৰক্ষাত্তির চেলা । সমস্ত পাড়া চুপচাপ। চাদনি রাতে ছাদের উপর সারি সারি গাছের ছায়া যেন স্বপ্নের আলপনা। ছাদের বাইরে লিঙ্ক গাছের মাথাটা বাতালে ছলে উঠছে, বিলমিল করছে পাতাগুলো জানি নে কেন সবচেয়ে চোখে পড়ত সামনের গলির ঘুমন্ত বাড়ির ছাদে একটা ঢালু-পিঠ-ওয়ালা বেঁটে চিলেকোঠা। দাড়িয়ে দাড়িয়ে কিলের দিকে যেন আঙুল বাড়িয়ে রয়েছে। রাত একটা হয়, ছুটো হয় । সামনের বড়ো রাস্তায় রব ওঠে, 'বলো হরি হরিবোল।” >> খাচায় পাখি পোষার শখ তখন ঘরে ঘরে ছিল । সবচেয়ে খারাপ লাগত পাড়ার কোনো বাড়ি থেকে পি জরেতে-বাধা কোকিলের ডাক । বৌঠাকরুন জোগাড় করেছিলেন চীনদেশের এক শুষিা পাখি । কাপড়ের ঢাকার ভিতর থেকে তার শিল উঠত ফোয়ারার মতো। আরও ছিল নানা জাতের পাখি, তাদের খাঁচাগুলো কুলত পশ্চিমের বারান্দায় । রোজ সকালে একজন পোকাওয়ালা পাখিদের খোরাক জোগাত। তার ঝুলি থেকে বেরত ফড়িঙ, ছাতুখোয় পাখিদের জন্তে ছাতু। জ্যোতিদাদা ভাষার সকল তর্কের জবাব দিতেন। কিন্তু মেয়েদের কাছে এতটা আশা করা যায় না । একবার বৌঠাকরুনের মজি হয়েছিল খাচায় কাঠবিড়ালি পোষা । আমি বলেছিলুম কাজটা অন্যায় হচ্ছে, তিনি বলেছিলেন গুরুমশায়গিরি করতে হবে না। একে ঠিক জবাব বলা চলে না। কাজেই কথা-কাটাকাটির বদলে লুকিয়ে দুটি প্রাণীকে ছেড়ে দিতে হল। তার পরেও কিছু কথা শুনেছিলুম, কোনো জবাব করি নি । আমাদের মধ্যে একটা বাধা বগড়া ছিল কোনোদিন ধার শেষ হল না, লে কথা מי বলছি । I উমেশ ছিল চালাক লোক। বিলিতি দরজির দোকান থেকে বত-সব ছাটাকাটা নানা রঙের রেশমের ফালি জলের জয়ে কিনে জানত, তার সঙ্গে নেটের টুকরো আর খেলো লেল মিলিয়ে মেজেদের জামা বানানো স্থত। কাগজের প্যাকেট খুলে সাবধানে মেলে ধরত মেয়েদের চোখে, বলত এই হচ্ছে আজকের দিনের ফ্যাশন’। ঐ মন্ত্রটার টান মেয়েরা সামলাতে পারত না। আমাকে কী দুঃখ দিত বলতে পারি নে। বারবার