পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৩২ রবীশ্র-রচনাবলী মহাপক্ষক। তুমি গুরু ? তুমি আমাদের সমস্ত নিয়ম লঙ্ঘন করে এ কোন পথ দিয়ে এলে । তোমাকে কে মানবে। দাদাঠাকুর । আমাকে মানবে না জানি, কিন্তু আমিই তোমাদের গুরু । মহাপঞ্চক। তুমি গুরু ? তবে এই শক্রবেশে কেন। দাদাঠাকুর। এই তো আমার গুরুর বেশ। তুমি যে আমার সঙ্গে লড়াই করবে— সেই লড়াই আমার গুরুর অভ্যর্থনা । .. মহাপঞ্চক । আমি তোমাকে প্রণাম করব না। দাদাঠাকুর । আমি তোমার প্রণাম গ্রহণ করব না— আমি তোমাকে প্রণত করব । মহাপঞ্চক। তুমি আমাদের পূজা নিতে আস নি। দাদাঠাকুর। আমি তোমাদের পূজা নিতে আসি নি, অপমান নিতে এসেছি। আমি তো মনে করি আজ যুরোপে যে যুদ্ধ বেধেছে সে ঐ গুরু এসেছেন বলে । র্তাকে অনেক দিনের টাকার প্রাচীর, মানের প্রাচীর, অহংকারের প্রাচীর ভাঙতে হচ্ছে । তিনি আসবেন বলে কেউ প্রস্তুত ছিল না। কিন্তু তিনি যে সমারোহ করে আসবেন তার জন্তে আয়োজন অনেকদিন থেকে চলছিল। যুরোপের স্বদর্শন যে মেকি রাজা স্ববর্ণের রূপ দেখে তাকেই আপন স্বামী বলে স্কুল করেছিল— তাই তো হঠাৎ আগুন জলল, তাই তো সাত রাজার লড়াই বেধে গেল— তাই তো যে ছিল রানী তাকে রথ ছেড়ে, তার সম্পদ ছেড়ে, পথের ধুলোর উপর দিয়ে হেঁটে মিলনের পথে অভিসারে যেতে হচ্ছে । এই কথাটাই ‘গীতালি'র একটি গানে আছে— এক হাতে ওর কৃপাণ আছে আর-এক হাতে হার । ও যে ভেঙেছে তোর দ্বার । আসে নি ও ভিক্ষা নিতে, লড়াই করে নেবে জিতে পরানটি তোমার । ও যে ভেঙেছে তোর দ্বার । মরণেরি পথ দিয়ে ওই আসছে জীবনমাকে ও বে" আসছে ৰীরের সাজে।