পাতা:রহস্য-সন্দর্ভ (চতুর্থ পর্ব্ব).pdf/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

B গুজরাটের ইতিহাস । আলাউদ্দীন দিল্লীর সিংহাসনে আধিপত্য করিতেন । কর্ণদেব সদ্বাদে উক্ত সম্রাটের আক্রমণ প্রতিরোধ করণার্থ অস্ত্র ধারণ করিয়াছিলেন । শুলতানের ভ্রাতা আলিয়া খা সৈন্যাধ্যক্ষ হইয়া কয়েক বার তাহার সহিত প্রবলৰূপে যুদ্ধ করিয়া পরিশেষে প্রচ্ছন্নবেশে আনহিলবারার রাজপাট হস্তগত করে, এবং কর্ণদেবের মহিষীকে সপুএক প্লুত করিয়া দিল্লীশ্বরের সন্নিধানে প্রেরণ করে। এই ঘটনায় কর্ণ অত্যন্ত পরিতাপিত হইয়া খন্দেশস্থ এক গিরিসঙ্কটে অবস্থিতি করিলেন । দেবগড়ের মহারাজা তৎকালে কর্ণদেবের সহায়তা-করণে কতসঙ্কল্প হইয়াছিলেন । যাহা হউক তাহার পত্নী কমলাদেবী দিল্লীস্থ সম্রাট আলাউদ্দীনের নবপ্রণয়ের বশবর্তিনী হইয়া । পতিসম্পর্ক একেবারে বিস্মৃত হইয়াছিলেন । ঐ দুষ্ট রমণীর কুমন্ত্রণায় আলাউদ্দীন পুনশ্চ কর্ণদেবের সহিত যুদ্ধে প্ররক্ত হইলেন । যুদ্ধের হেতু এই যে মহারাজ কর্ণদেবের এক দুহিতা ছিল, সে অত্য স্তু ৰূপবতী, নাম দেবলদেবী । তিনি কমলা রাজ্ঞীর গর্ভজাত । এতাবৎকাল ঐ কন্যা পিতার নিকট অবস্থিতা ছিল । কিন্তু তাহাকে দিল্লীতে লইয়া যাইবার নিমিত্ত কমলাদেবী যবন সম্রাটকে কুমন্ত্রণ প্রদান করেন। এই হেতু পুনশ্চ যুদ্ধের উপক্রম হইল। কিন্তু এখন পৰ্য্যন্ত সূৰ্য্যবংশীয় ক্ষত্রিয়ের যবনকে কন্যা দান করা শত্রুহন্তে মৃত্যু হইতেও অপকষ্ট বোধ করিতেন ; তজ্জন্য কর্ণদেব দেবগড়ের রাজপুপ্রকে কন্যা প্রদান করত সন্ত্রম রক্ষা করিলেন । পরন্তু যৎকালে উল্লিখিত কুলবধু পতিগৃহে গমন করেন, তৎকালে সম্রাটের কতকগুলি সৈন্য ইলোরার পৰ্বত-গুহাভিমুখে যাত্রা করিতেছিল । ঐ নব, পরিণত রাজদুহিতার সমভিব্যাহারে অল্প মাত্র অনুচর বিলোকনে তাহারা দেবলদেবীকে বলপূর্বক [রহস্য-সন্দর্ভ। প্নত করত দিল্লীর অন্তঃপুরে প্রেরণ করিল। এই ঘটনার পর প্রায় পঞ্চাশং বৎসর পর্য্যন্ত গুজরাট দেশে ক্রমাগত যুদ্ধবিগ্রহে হিন্দু নৃপতিগণ নিযুক্ত ছিলেন । কিন্তু তাহাতে কোন মতে যবনহছ.ত আপনাদের রাজ্য উদ্ধার করিতে পারেন নাই । মহারাজ কর্ণদেবের পরাভূত হওনাবধি দিল্লীস্থ পাঠান-সম্রাটের অধীনস্থ শাসনকর্তারাই গুজরাট প্রদেশে আধিপত্য করিতেন । কিন্তু ১৩৯৮ খ্ৰীষ্টাব্দে মোগল-বর্ণশীয় অধিপতি তৈমুর্লঙ্গ ভারতবর্ষ আক্রমণ করত দিল্লীর প্রভাব এককালে প্ৰণষ্ট করিয়াছিলেন। ঐ সময়ে মোজফফর নাম কোন ব্যক্তি গুজরাটের শাসনকৰ্ত্তার পদে নিযুক্ত ছিলেন, তেঁহ ঐ সুযোগে গুজরাট প্রদেশে আপনার প্রদুত্ব স্থাপনপূর্বক শুলতান আখ্যা প্রচার করেন । ১৪১১ খ্রীষ্টাব্দে মোজফফরশাহের মৃত্যুতে তদীয় পে।এ অহম্মদ শাহ রাজত্ব প্রাপ্ত হন । এই অহম্মদ শাহ এক ভদ্রকালীর মন্দির উৎপাটন করত আছন্মদাবাদ নামে নূতন নগর পত্তন করেন, এবং তথায় র্তাহার রাজপাট সংস্থাপিত হইয়াছিল। এস্থলে । বলা অনাবশ্যক নহে যে প্রাচীন হিন্দু নৃপতিগণ যে সমস্ত অতি আশ্চর্য্য মনোজ্ঞপুরী নিৰ্ম্মাণ কয়িয়াছিলেন, আহম্মদ শাহ তৰাবৎ ভগ্ন করত এই নূতন নগর মধ্যে উহার উপকরণ আনয়নপূর্বক তাহার শোভাসম্পাদন করিয়াছিলেন । প্রসিদ্ধ আছে যে অহম্মদ শাহু আনহিলবারা ও চন্দ্রাবতী নামক অদ্বিতীয় ঐশ্বর্য্যশালী নগরী অতিনিৰ্দ্দয়তার সহিত লুণ্ঠন এবং অতি চমৎকার রাজপ্রাসাদসকল ভগ্ন করত তত্ৰত্য উৎক্লষ্ট মৰ্ম্মর প্রস্তর ও অন্যান্য মূল্যবান উপকরণ দ্বারা অভিনব রাজপাট নিৰ্ম্মাণ করাইয়াছিলেন, এবং যে সকল দ্রব্য অব্যবহার্য্য হইয়াছিল তাহা