বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রাজমোহনের স্ত্রী.djvu/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৮
রাজমোহনের স্ত্রী

 একটা গভীর চাপা দীর্ঘনিশ্বাসের মত শব্দে কথোপকথননিরত ব্যক্তিরা চমকিয়া উঠিল।

 ভিখু বিস্ময়ে চীৎকার করিয়া উঠিল, ও আবার কি?

 সর্দ্দারও বিস্মিত হইয়াছিল, সেও বলিয়া উঠিল, তাই তো, ওটা আবার কি?—তিনজনেই কিয়ৎকালের জন্য নীরব রহিল।

 সর্দ্দার বলিল, এ ঘরে আর কেউ আছে নাকি? তা হ’লে ব্যাপারটা মন্দ গড়ায় না। দেখি।

 তাহার যেখানে বসিয়া ছিল, সেখান হইতেই সেই অস্পষ্ট আলোকেই ঘরের সমস্ত অংশ যতদূর সম্ভব দৃষ্ট হইতেছিল—সর্দ্দার তথাপি উঠিয়া দাঁড়াইল এবং ঘরের সকল কোণই পরীক্ষা করিল। কিন্তু আর কিছুই সে দেখিতে পাইল না। পূর্ব্বস্থানে ফিরিয়া আসিতে আসিতে সে বলিল, অবাক কাণ্ড বটে! মরুকগে যাক। হুজুর আমার মনিবের কথা বলছিলেন, তিনি কে হুজুরের জানা আছে কি?

 তাহার ভাষা ও কণ্ঠস্বরে মাধব অত্যন্ত বিরক্ত হইয়া উঠিল, কিন্তু বিরক্তি চাপিয়া সে সংক্ষেপে জবাব দিল, হ্যাঁ জানি, মথুর ঘোষ। তার মতলবটা আমাকে জানাবে কি?

 ভিখু বিস্ময়ে হাঁ করিয়া ফেলিল, সর্দ্দারের কানে কানে বলিল, ব্যাপার কি, সব জেনে ফেলেছে দেখছি!

 সর্দ্দার তেমনই চাপা গলায় বলিল, বোকার ডিম, এতে অবাক হবার কি আছে! রাধানগরে আর কার এমন লোহার পাতমোড়া কয়েদখানা আছে?

 কিন্তু সে মাধবের প্রশ্নের কোনও জবাব দিল না; মাধবের গর্ব্ব খর্ব্ব করিবার সঙ্কল্পবশতও বটে, আবার তাহাকে একটু খেলাইয়া তাহার নিজের মতলব হাঁসিল করিবার জন্যও বটে, সে চুপ করিয়া রহিল। কিন্তু গাঁজার ধোঁয়ায় ভিখুর মেজাজ তখন চড়িতে আরম্ভ করিয়াছিল। সে সাধারণত