প্রবীণাকে সম্বোধন করিয়া মাধব বলিল, মাসী, ব্যাপার কি? বাড়িতে বাজার বসেছে যে!
মাসী প্রসন্ন স্নেহের হাসি হাসিয়া বলিলেন, পাঁচজন মেয়ে এক জায়গায় হ’লে যা হয় তাই হচ্ছে বাছা, চ্যাঁচানোই তো স্বভাব ওদের।
—খুড়ীমা কোথায় মাসী?
—সেই কথা তো আমিও ভাবছি বাপু। সকাল থেকেই তাকে দেখতে পাচ্ছি না।
মাধব বিস্মিত হইয়া বলিল, সকাল থেকে দেখতে পাচ্ছ না? কথাটা তা হ’লে দেখছি সত্যি।
—কি সত্যি বাবা?
—এমন কিছু নয় মাসী, তোমাকে পরে বলব। তা হ’লে তিনি গেলেন কোথায়? জিজ্ঞেস ক’রে দেখ তো কেউ তাকে দেখেছে কি না!
মাছ ও পিতলের বাসন লইয়া যাহারা ব্যস্ত ছিল, তাহাদিগকে সম্বোধন করিয়া প্রবীণা কহিলেন, অম্বিকা, শ্রীমতী, তোরা কি তাকে দেখেছিস?
মৃদু কণ্ঠে তাহারা জবাব দিল, না।
প্রবীণা কহিলেন, আশ্চর্য্য! তারপর যেন দেওয়ালকে সম্বোধন করিয়াই কহিলেন, কেউ দেখে নি তাকে?
দেওয়ালের ওপাশ হইতে কে জবাব দিল, স্নানের সময় তাকে বড়বাড়িতে দেখে এসেছি।
প্রবীণা বিস্মিত হইয়া কহিলেন, বড়বাড়িতে?
মাধবও বলিয়া উঠিল বড়বাড়িতে? মথুরদাদার বাড়িতে?—মাধব হঠাৎ যেন ব্যাপারটা বুঝিতে পারিল; অর্দ্ধস্ফুট স্বরে বলিল, মথুরদাদা! তা হ’লে কি তিনিই এসব করাচ্ছেন? না, না, তা হতে পারে না। আমি অন্যায় সন্দেহ করছি।