পাতা:রানী শরৎ সুন্দরীর জীবন-চরিত - গিরীশচন্দ্র লাহিড়ী.pdf/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহারাণী শরৎসুন্দরীর জীবন-চরিত। >s ○ পারে। অথব; যাদ সে পুনঃ পুন: এইরূপ অপরাধ করিয়া থাকে, তবে তাহাকে আমার অধিকার হইতে তুলিয়া দিলেই তাহার গুরুতর শাস্তি ছয় । তাহা না করিয়া সেই পাপীর অর্থ আমার তহবিলে আনিয়া আমাকে পর্য্যন্ত পাপগ্ৰস্ত করা বোধ হয় ভাল হয় নাই ।” মহারাণী এই জন্য অনাহারে রোদন করিতেছেন, ईश জানিয়াই প্রধান কৰ্ম্মচারী, বিশেষ লজ্জিত হইয়াছিলেন। তখন তিনি অতি বিনীতভাবে কহিলেন– “মা ! আমি প্রজাকে এখনই ছাড়িয়া দিতেছি, আপনি স্নান আহার করুন।” দৃঢ় অধ্যবসায়-শালিনী মহারাণী উত্তর করিলেন যে—“আপনি স্বীকার করুন যে, আর কোন দিন কাহাকেও এইরূপ কষ্ট দিবেন না, তাহা হইলে আমি স্নান আহার করিব।” প্রধান কৰ্ম্মচারী তাহাই স্বীকার করিলেন । আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে, মহারাণী শরৎসুন্দরী, আপনার চরিত্রগঠনের কোন প্রত্যক্ষ দৃষ্টান্ত না পাইয়া, এবং হিংসা দ্বেষপূর্ণ সঙ্কীর্ণহৃদয় স্ত্রী-মণ্ডলীর মধ্যে থাকিয়াও, আত্মপ্রকৃতির মহত্বে এই অতুলনীয় চরিত্র লাভ করিয়াছিলেন । বর্তমান কালে কেহ কেহ পরমা সাধবী সীতা এবং সাবিত্রীকে কবি কল্পিত চিত্র বলিয়া থাকেন, তাহাদের একবার শরৎসুন্দরীর চরিত্র আলোচনা করিলে আর সে ভ্রান্তি থাকিবে না । শরৎসুন্দরীর মহৎ চরিত্র এক প্রকার কবি কল্পনারও অতীত । কবির, সৰ্ব্বংসহ বসুমতীকে ক্ষমাগুণের আদর্শে গ্রহণ করিয়া থাকেন। কিন্তু কেহ ভূমিতে পদাঘাত করিলে প্রতিঘাতের কষ্ট পাইয়া থাকে, ফলতঃ ক্ষমাময়ী শরৎসুন্দরীকে অনেকে অযথা আক্রমণ করিয়াও প্রতিঘাত পায় নাই । শত শত দুষ্ট স্বভাব। হিংসা পরায়ণ স্ত্রীলোকে, তাহার অপরিসীম দয়ায় অসাধারণ ক্ষমাশীলতার মৰ্ম্ম গ্রহণে অসমর্থ হইয় তাহার প্রসাদে পরম সুখে থাকিয়াও র্তাহাকে দিবারাত্রি যাতন।