পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/২১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ২০২ ] মান হইয়া থাকেন। যেমন বায়ুর কত ভার কাহাকেও বুঝাইয়া দেওয়া যায় না, দুগ্ধে মাখন আছে কি না, তাহা কথায় কাহাকেও বুঝাইয়া দেওয়া যায় না, সন্দেশের আস্বাদন কখন বর্ণনা করিয়া অপরকে জ্ঞাত করা যায় না, রমণ-মুখ কখন শব্দের দ্বারা তদৃভাবানভিজ্ঞকে উপলব্ধি করান ৰায় না, সেইরূপ স্থল দৃষ্টান্ত অবলম্বন পূর্বক আত্মা প্রমাণ করিতে যাওয়া বিড়ম্বন মাত্র । কেহ বলিতে পারেন, তবে আপনার এ বিড়ম্বন কেন ? আমি পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি যে, আমি যন্ত্রবৎ কার্য করিতে বাধ্য। কতিপয় ব্যক্তি এ প্রসঙ্গটী শ্রবণ করিতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন, সুতরাং তাহাদের মনোরথ পূর্ণ করিবার নিমিত্ত প্রভুর আদেশ পালন করিতে আসিয়াছি । আত্মা কি, কেমন, তাহ সাধন বিন! জ্ঞাত হওয়া যায় না। যোগের অবস্থাবিশেষে উপনীত হইলে আত্ম! স্বপ্রকাশ হন ; যাহাকে স্বস্বরূপ দর্শন কহে । বৰ্ত্তমানকালে ধৰ্ম্ম শাস্ত্রদিতে আমাদের বিশ্বাস না থাকায় আত্ম বলিয়া কিছুই মানিতে চাহি না। আয়ু মানিলে স্বাধীনভাব বিদূরিত হইয়। যায়, সুতরাং ইচ্ছামত কুক্রিয়াদিপরতন্ত্র হওয়া যায় না । ভগবানের ভয় থাকি”ে পর কালের কৰ্ম্মফল বোধ থাকিলে, কৰ্ত্তব্য ক্রটির ভীষণ পরিণাম মানস; ক্ষত্রে নিয়ত জাগরূক থাকিলে, কখন কেহ অদ্যায় অকৰ্ত্তব্য কার্য্যপরায়ণ হইতে পারে না। সেইজন্য আত্মা অবিশ্বাস করা বর্তমানকালের যুগধৰ্ম্ম হইয়। উঠিয়াছে। রামকৃষ্ণদেব আত্মার অস্তিত্ব এবং তাহার কার্য্য প্রদর্শন করাইবার নিমিত্ত অবতীর্ণ হইয়াছিলেন । তিনি প্রতিমুহূৰ্ত্তে সমাধিস্থ হইয়া আত্মার পরিচয় দিয়া গিয়াছেন । তিনি যখন যে কোন লীলা কথা শ্রবণ করিতেন, তিনি তখন সমাধিস্থ হইতেন, অর্থাৎ তাহার আত্মা দেহত্যাগ করিয়া বাহির হইয়া চলিয়া যাইতেন । তিনি একদিন সমাধিভঙ্গের পর বলিয়াছিলেন যে, “আমি সরযু তীরে চলিয়া গিয়া